দুর্গা কার্নিভ্যালে মাতল কলকাতা

কলকাতার রেড রোডে বর্ণাঢ্য দুর্গা কার্নিভ্যাল। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
কলকাতার রেড রোডে বর্ণাঢ্য দুর্গা কার্নিভ্যাল। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

এ এক চোখধাঁধানো বর্ণাঢ্য প্রতিমা নিরঞ্জন উৎসব। এই উৎসব গতকাল শুক্রবার কলকাতার মানুষকে মুগ্ধ করেছে। ভাসিয়ে দিয়েছে আলোর বন্যায়। আলোর রোশনাই ছড়িয়ে পড়ে কলকাতার রেড রোডজুড়ে।

কলকাতার ঐতিহ্যবাহী দুর্গাপূজা গত মঙ্গলবার শেষ হয়। গতকাল ছিল পুরস্কার পাওয়া কলকাতার সেরা ৭২টি সর্বজনীন পূজামণ্ডপের দুর্গাপ্রতিমা নিয়ে নিরঞ্জন উৎসব। বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে আয়োজিত এ উৎসবের নাম দুর্গা কার্নিভ্যাল। কলকাতা, হাওড়া আর উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার সেরা ৭২টি পুজো কমিটি উৎসবে শামিল হয়।

কার্নিভ্যালে নৃত্যরত শিল্পীরা। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
কার্নিভ্যালে নৃত্যরত শিল্পীরা। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

২০১৬ সালে প্রথম শুরু হয় এই দুর্গা নিরঞ্জন উৎসব। ২০১৬ সালের প্রথম কার্নিভ্যালে যোগ দিয়েছিল ৩০টি পূজামণ্ডপের প্রতিমা । ২০১৭ সালে ছিল ৫৬টি প্রতিমা। ২০১৮ সালে যোগ দিয়েছিল রাজ্য সরকার পুরস্কৃত ৭৪টি পূজামণ্ডপের প্রতিমা। নিরঞ্জন উপলক্ষে শোভাযাত্রার পর কলকাতার বাবুঘাটের গঙ্গার বিভিন্ন ঘাটে এই প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। কিছু পূজা কমিটি নিজ নিজ প্রতিমা ফিরিয়ে নিয়ে যায় মণ্ডপে রাখতে।

কার্নিভ্যালে যোগ দেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
কার্নিভ্যালে যোগ দেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

কার্নিভ্যালে যোগ দেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়সহ দেশ-বিদেশের অতিথিরা। যোগ দেন কলকাতায় থাকা বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তারাও।
গতকালের এই কার্নিভ্যালে যোগ দেওয়া ৭২টি সর্বজনীন পূজা কমিটির মধ্যে উল্লেখযোগ্য রয়েছে শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব, একডালিয়া এভারগ্রিন, কলেজ স্কয়ার সর্বজনীন, হরিদেবপুর ৪১ পল্লি, কাশী বোস লেন সর্বজনীন, মেটিয়াব্রুজের ফতেহপুর দুর্গোৎসব কমিটি, বালিগঞ্জ কালচারাল, সিমলা ব্যায়াম সমিতি, দমদম তরুণ দল।

প্রতিমা সাজিয়ে চলছে শোভাযাত্রা। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
প্রতিমা সাজিয়ে চলছে শোভাযাত্রা। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

কার্নিভ্যাল দেখতে কলকাতার রেড রোডে তৈরি করা হয় একটি বিশেষ মঞ্চ। মূল মঞ্চটি তৈরি করা হয় বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুরের পোড়া মাটির মন্দিরের আদলে। এবারের থিম ’রাঙামাটির দেশ’। অতিথিদের জন্য তৈরি হয় আলাদা মঞ্চও। গতবার মঞ্চটি তৈরি হয়েছিল একটি রাজবাড়ির আদলে।

বাইকে চড়েছে জীবন্ত প্রতিমা। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
বাইকে চড়েছে জীবন্ত প্রতিমা। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

গতকাল বিকেল সাড়ে চারটায় শুরু হয়ে এই কার্নিভ্যাল শেষ হয় রাত সোয়া আটটায়। এই কার্নিভ্যাল বা দুর্গাকে নিয়ে বিশেষ শোভাযাত্রায় যোগ দেন সংস্কৃতিকর্মী ও শিল্পীরা।

টালিউডের একঝাঁক তারাকাও যোগ দেন এই কার্নিভ্যালে। দর্শকদের সুবিধার্থে লাগানো হয় জায়ান্ট স্ক্রিন।