বিজ্ঞাপন দিয়ে অচলাবস্থার কথা স্বীকার করল কাশ্মীর প্রশাসন

স্থানীয় ১০টি পত্রিকার প্রথম পাতায় বিজ্ঞাপন দিয়েছে কাশ্মীরের প্রশাসন। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত
স্থানীয় ১০টি পত্রিকার প্রথম পাতায় বিজ্ঞাপন দিয়েছে কাশ্মীরের প্রশাসন। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত

ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে কাশ্মীরে চলমান অচলাবস্থার কথা অনেকবার উঠে এসেছে। কিন্তু কাশ্মীরের প্রশাসন শুরু থেকেই দাবি করে এসেছে, কাশ্মীরে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। তবে এবার নিজেদের সেই অবস্থান থেকে সরে এল কাশ্মীর প্রশাসন। তারা স্বীকার করে নিয়েছে, এত দিন কাশ্মীরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল না। স্বীকার করার পদ্ধতিটাও বেশ ভিন্ন। জম্মু ও কাশ্মীরের ১০টি পত্রিকায় একযোগে বিজ্ঞাপন দিয়ে সাধারণ জনগণের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছে কাশ্মীরের প্রশাসন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম স্ক্রল ইনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল শুক্রবার স্থানীয় ১০টি পত্রিকার প্রথম পাতায় সাধারণ কাশ্মীরিদের উদ্দেশে বিজ্ঞাপনের আকারে বার্তা দিয়েছে কাশ্মীরের প্রশাসন। কাশ্মীরে চলমান পরিস্থিতিতে কারা লাভবান হচ্ছে, জনগণকে সেটি ভেবে দেখারও আহ্বান জানিয়েছে প্রশাসন।

বিজ্ঞাপন বার্তার একদম শুরুতেই বলা হয়েছে, ‘দোকানপাট বন্ধ। কোনো গণপরিবহন নেই? কারা লাভবান হচ্ছে?’ লাল ও নীল রঙের সেই বিজ্ঞাপন বার্তায় আরও বলা হয়েছে, ‘৭০ বছরের বেশি সময় ধরে জম্মু-কাশ্মীরের মানুষকে ভুল পথে পরিচালিত করা হচ্ছে। তাদের অসৎ প্রচারণার শিকার হতে হয়েছে। এ কারণে সন্ত্রাস, সহিংসতা, ধ্বংস ও দারিদ্র্যের দুষ্টচক্রে আবদ্ধ থাকতে হয়েছে তাদের।’

‘বিচ্ছিন্নতাবাদীরা’ সাধারণ পরিবারের সন্তানদের সহিংসতার পথে ঠেলে দিচ্ছে উল্লেখ করে সরকারি ওই বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীরা তাদের নিজেদের সন্তানদের পড়াশোনা ও চাকরির জন্য বিদেশে পাঠায়। কিন্তু সাধারণ পরিবারের সন্তানদের ঠেলে দিচ্ছে সংঘাতের পথে। আমরা কি এটা সহ্য করব?’

নিজেদের নিরাপত্তার জন্যই কাশ্মীরিদের যেকোনো একটি পথ বেছে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে বিজ্ঞাপনটিতে, ‘আমরা কি বহু বছর ধরে চলতে থাকা এই সহিংসতাকে আমাদের ওপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে দেব? গুজব ও ভুয়া তথ্য টিকে থাকবে, নাকি আমরা নিজেদের ভালোর জন্য সঠিক তথ্য বেছে নেব, সেই সিদ্ধান্ত আমাদেরই নিতে হবে। এটা (কাশ্মীর) আমাদের বাড়ি। নিজেদের সমৃদ্ধির কথা আমাদেরই ভাবতে হবে। ভয় কিসের?’

কাশ্মীরের তথ্য ও জনসংযোগ বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, প্রতিটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে প্রশাসনের খরচ হয়েছে ৫০ হাজার রুপি। ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ‘জম্মুর পাঁচটি ও কাশ্মীরের পাঁচটি পত্রিকায় এই বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল (শনিবার) অন্য ১০টি পত্রিকায় এই বিজ্ঞাপন আবার দেওয়া হবে।’

কাশ্মীর প্রশাসনের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়ার ঘটনা অবশ্য এবারই প্রথম নয়। গত মাসেই কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের ‘সুবিধা’ বর্ণনা করে বেশ কয়েকটি স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছিল তারা। গত ৫ আগস্ট বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর কাশ্মীরে একপ্রকার অচলাবস্থা তৈরি হয়। টানা ৬৮ দিন ইন্টারনেট সংযোগ থেকেও বিচ্ছিন্ন ছিল কাশ্মীরের জনগণ।