ঘোড়ায় চড়ে ছুটছেন কিম

বরফ আচ্ছাদিত পাহাড়ে ছুটে চলেছেন কিম জং-উন। ছবি: এএফপি
বরফ আচ্ছাদিত পাহাড়ে ছুটে চলেছেন কিম জং-উন। ছবি: এএফপি

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং–উনকে তুষার ছাওয়া মাউন্ট পিকতুর পার্বত্য এলাকায় একটা সাদা ঘোড়া দাবড়ে বেড়াতে দেখা গেছে। পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যে মানুষটি যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্বের সঙ্গে একা টক্কর দিচ্ছেন, তাঁর এমন ঘোড়া ছোটানোর বিষয়টি বেশ কৌতূহল সৃষ্টি করেছে। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে এ খবর ও ছবি প্রকাশিত হয়।

পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কিম জং-উনের বৈঠক ছিল গত বছরের অন্যতম আলোচিত ঘটনা। যদিও গত বছরের জুন মাসে সিঙ্গাপুরে দুই নেতার প্রথম ওই বৈঠক কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়। এর ধারাবাহিকতায় এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভিয়েতনামে তাঁদের দ্বিতীয় বৈঠক থেকেও সফলতা আসেনি। তবে ওই বৈঠকে যোগ দিতে উড়োজাহাজ ছেড়ে ট্রেনে ভিয়েতনাম যাত্রাও কম আলোচনার খোরাক জোগায়নি।

মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে সৎভাই কিম জং-নাম খুন হওয়ার পর সমালোচনার ঝড় ওঠে, বিষাক্ত রাসায়নিক (ভিএক্স নার্ভ এজেন্ট) প্রয়োগে এ হত্যার ঘটনা তাঁর ইশারায় ঘটেছে। সবশেষ গত আগস্টের প্রথম সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ সামরিক মহড়ায় ক্ষুব্ধ উত্তর কোরিয়ার একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় তাঁর মেজাজের ধারই পাওয়া গেছে। এই মেজাজি উনকে দেখা গেল একেবারেই ভিন্নভাবে।

মাউন্ট পায়েকতুতে কিম জং-উন। ছবি: রয়টার্স
মাউন্ট পায়েকতুতে কিম জং-উন। ছবি: রয়টার্স

আজ বুধবার বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়, কিমের ঘোড়ায় চড়ে ঘুরে বেড়ানোর দৃশ্য দেখে সমালোচকেরা বলছেন, বিশ্বের নজর কাড়তেই তিনি এ কাণ্ড ঘটিয়েছেন। যদিও কিম আগেও ২ হাজার ৭৫০ মিটার উচ্চতার এই পাহাড়ে আরোহণ করেছেন এবং সেগুলোর ছবিও প্রকাশ হয়েছিল।

দ্য কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) উত্তর কোরিয়ার বরফ আচ্ছাদিত সর্বোচ্চ পাহাড় মাউন্ট পায়েকতু-এ কিমের ঘোড়া চালিয়ে ছুটে বেড়ানোর একের পর এক ছবি প্রকাশ করেছে।

পাহাড়টি দেশটির বিশেষ প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। পাহাড়ের ওই অঞ্চলটি কিম জং-উনের বাবার জন্মস্থান হিসেবে খ্যাতনামা।

এর আগেও এই পাহাড়ে আরোহণ করেছেন কিম জং-উন। ছবি: এএফপি
এর আগেও এই পাহাড়ে আরোহণ করেছেন কিম জং-উন। ছবি: এএফপি

আজ কেসিএনএর প্রতিবেদনে বলা হয়, পিকতু পর্বতে ঘোড়ায় চড়ে তাঁর (কিমের) ছুটে চলা কোরীয় বিপ্লব ইতিহাসের এক অন্য উচ্চতার গুরুত্ব বহন করে। মাউন্ট পিকতুর ওপর ঘোড়ায় বসে তিনি গভীরভাবে স্মরণ করেছেন, দেশকে আস্থার সঙ্গে সবচেয়ে শক্তিশালী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কঠোর সংগ্রামের পথ পাড়ি দেওয়ার কথা। পিকতুর মতো তিনি অবিচল থাকবেন।

কিম কমপক্ষে তিনবার মাউন্ট পিকতুতে আরোহণ করেছেন। গত বছর তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জো-ইনের সঙ্গে পাহাড়টি পরিদর্শন করেছিলেন।

মাউন্ট পিকতু একটি জীবন্ত আগ্নেয়গিরি। চার হাজারের চেয়েও বেশি বছর আগে প্রথম কোরীয় রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডানগুনের জন্মস্থান বলা হয় এটিকে। পর্বতটি উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ং থেকে ৩৮৫ কিলোমিটার দূরে। এটির অবস্থান উত্তর কোরিয়া এবং চীনের সীমান্তের ডান দিকে।