লালে লাল যে নারী

বসনিয়ার সাবেক স্কুলশিক্ষক জোরিকা রেবার্নিক। ছবি: রয়টার্স
বসনিয়ার সাবেক স্কুলশিক্ষক জোরিকা রেবার্নিক। ছবি: রয়টার্স

গোটা জীবনই লালের মধ্যে বসনিয়ার জোরিকা রেবার্নিকের। মৃত্যুর পরও তিনি ঠিক এভাবেই থাকতে চান।

চার দশক ধরে মাথা থেকে পা পর্যন্ত লালরঙা পোশাক পরছেন জোরিকা। স্বামী জোরানের সঙ্গে বিয়েটাও হয়েছিল লাল রঙের গাউন পরেই। ৬৭ বছর বয়সী বসনিয়ার এই অধিবাসী ভারত থেকে বিশেষ এক ধরনের লাল গ্রানাইট পাথর আমদানি করেছেন। নিজের এবং স্বামীর সমাধিস্তম্ভ তৈরি করতেই এই পাথর আনা হয়েছে।

অবসরপ্রাপ্ত এই স্কুলশিক্ষক একটি লাল বাড়িতে থাকেন। তিনি ও জোরান লাল রঙের প্লেটে খাবার খান। লাল গ্লাসে পান করেন। লাল বিছানায় ঘুমান। জোরিকা তাঁর চুলগুলোও লাল রঙে রাঙিয়েছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জোরিকা বলেন, ‘আমার বয়স তখন ১৮ কি ১৯, হঠাৎ করেই লাল পোশাক পরার ঝোঁক মাথায় এল। আমার বাড়ির সাজসজ্জা বা জামাকাপড়ে অবশ্যই অন্য কোনো রঙের একটি বিন্দুও থাকতে পারবে না।’

টকটকে সিঁদুররঙা লালের ছোপ তাঁর ভেতরে ‘শক্তি আর ক্ষমতার বোধ’ জাগিয়ে তোলে বলে জানান তিনি।

ঘরের প্রতিটি কণা লাল রঙে রাঙিয়েছেন জোরিকা। ছবি: রয়টার্স
ঘরের প্রতিটি কণা লাল রঙে রাঙিয়েছেন জোরিকা। ছবি: রয়টার্স

লাল রং নিয়ে জোরিকার এই আচ্ছন্নতা তাঁকে উত্তর বসনিয়ার নিজ শহর ব্রিজে বেশ পরিচিত করে তুলেছে। তিনি বলেন, ‘সবাই আমাকে চেনে। লোকজন আমাকে দেখলেই লাল রঙের বিভিন্ন জিনিস দেখায়।’ যত মূল্যবানই হোক না কেন, কোনো উপহার লাল না হলে তিনি তা নেন না।
এমনকি শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানেও ঐতিহ্যবাহী কালো রঙের পোশাক না পরে লাল রঙের পোশাক পরেন।

এ ক্ষেত্রে একমাত্র সমস্যা হলো, জোরিকা নতুন কিছু পরলে তাঁর স্বামী তা টের পান না। জোরান বলেন, ‘আমার চোখে কোনো পার্থক্য ধরা পড়ে না। সবকিছু এক রকমই মনে হয়।’