সাগরে মিষ্টি খেয়ে বেঁচে ছিলেন তিনি

উদ্ধারের পর ডিঙিতে নিউজিল্যান্ডের পর্যটক কুশিলা স্টেইন। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
উদ্ধারের পর ডিঙিতে নিউজিল্যান্ডের পর্যটক কুশিলা স্টেইন। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

নিউজিল্যান্ডের পর্যটক কুশিলা স্টেইন (৪৫) হারিয়ে গিয়েছিলেন ইজিয়ান সাগরে। দুদিন ধরে বাতাস দিয়ে ফোলানো রাবারের ডিঙিতে চড়ে সাগরে ভাসছিলেন স্টেইন।

প্রচণ্ড শীত ছিল। ছিল প্রচণ্ড ক্ষুধা। ৩৭ ঘণ্টা ধরে সাগরে ভেসে বেড়িয়েছেন স্টেইন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিল বয়েলড ললি। বয়েলড ললি অস্ট্রেলিয়াতে মিষ্টি হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। দুই দিন এই মিষ্টি খেয়েই ছিলেন স্টেইন। এ সময় শীত থেকে বাঁচতে নিজেকে তিনি প্লাস্টিকের ব্যাগে মুড়ে রেখেছিলেন।

স্টেইন একজন অভিজ্ঞ নাবিক। উদ্ধারকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণে তিনি মাথায় লাল রঙের ব্যাগ রেখেছিলেন। একটা আয়না দিয়েও তিনি উদ্ধারকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন।

ব্যাপক তল্লাশির পর গ্রিক কোস্টগার্ড গ্রিসের সবচেয়ে বড় ও উত্তরের দ্বীপ ক্রিট থেকে ১০১ কিলোমিটার দূরে স্টেইনকে খুঁজে বের করে। স্টেইনের মা ওয়েন্ডি স্টেইন স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, সাগরে প্রতিকূল পরিবেশে কীভাবে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা যায়, এর প্রশিক্ষণ আছে স্টেইনের। সেই প্রশিক্ষণই তাকে বাঁচিয়েছে।

মাইক নামের ব্রিটিশ এক নাগরিককে সহায়তা করতে যাত্রা করেছিলেন স্টেইন। তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চল থেকে গ্রিসের এথেন্সে যাওয়ার জন্য স্টেইন হালকা নৌযান নিয়েছিলেন। স্টেইনের মা বলেন, স্থানীয় সময় শুক্রবার গ্রিসের ছোট্ট দ্বীপ ফোলেগানড্রসে ডিঙিটি নোঙর করেন স্টেইন। সেখানে তিনি কিছুটা সময় কাটাতে চেয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার সময় নৌযানের দাঁড়টি পড়ে যায়। ঝোড়ো বাতাসে নৌকাটি গতি বদল করে অন্যদিকে চলে যায়।

শনিবার সকালে গ্রিসের কর্তৃপক্ষকে স্টেইনের হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানানো হয়। ছয়টি জাহাজ, একটি হেলিকপ্টার ও পানির তলদেশের ড্রোন নিয়ে কোস্টগার্ডরা স্টেইনকে খুঁজে বেড়ায়। স্টেইন যে সময়টায় সাগরে ছিলেন, সে সময়টায় তিনি ডিঙির এক পাশে মায়ের নাম ও যোগাযোগের নম্বর লিখে রাখেন। স্টেইনের আশঙ্কা ছিল তিনি আর না–ও বাঁচতে পারেন।

রোববার সকালে কোস্টগার্ড স্টেইনকে উদ্ধার করে। ক্রিট ও ফোলেগানড্রসের কাছাকাছি জায়গা থেকে স্টেইনকে উদ্ধার করা হয় বলে তাঁর মা জানান। স্টেইনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে পানিশূন্যতার জন্য চিকিৎসা দেওয়া হয়।

উদ্ধারের পর নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড হাসপাতালে স্টেইন তাঁর মাকে বলেন, ‘এখনো আমার কাছে একটি ললি আছে, মা।’