বন্দিশিবির থেকে ৫৬ 'বিদেশিকে' মুক্তি দেবে আসাম সরকার

আসামের কারাগারে স্থাপিত বন্দিশিবিরে (ডিটেনশন ক্যাম্প) ‘বিদেশি’ তকমা লাগিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া বন্দীদের মধ্যে ৫৬ জনকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি সরকার। এই ৫৬ জন বন্দীর কারাগারে থাকার মেয়াদ তিন বছর পার হয়েছে। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন, যেসব বন্দীর বন্দিশিবিরে আটক থাকার মেয়াদ তিন বছর পার হয়েছে, তাঁদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।

গত রোববার এই বন্দীদের মুক্তির দাবিতে আসামের বাঙালি যুব-ছাত্র ফেডারেশন রাজ্যব্যাপী আন্দোলন করে। পরে যুব-ছাত্র ফেডারেশনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন আসামের সীমান্ত পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা। সেখানেই বন্দীদের তালিকা, তাঁদের আবেদন ও কারাবন্দীর মেয়াদ পর্যালোচনা করে ৫৬ বন্দীর মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এর আগে গত ১৯ অক্টোবর আসামের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বাঙালি যুব-ছাত্র ফেডারেশন একটি বৈঠক করে। বৈঠকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে যেসব বন্দীর কারাবাস তিন বছর পার হয়েছে, তাঁদের মুক্তির দাবি তোলে যুব–ছাত্র ফেডারেশন। সেই লক্ষ্যে এবার ৫৬ জন বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় আসাম সরকার।

এরপর সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পুলিশের স্পেশাল ডিজিপি ভাস্কর জ্যোতি মহন্ত। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাঙালি যুব-ছাত্র ফেডারেশনের চেয়ারম্যান প্রদীপ রঞ্জন কর, সভাপতি দীপক দেবসহ কমিটির অন্য নেতারা।

বৈঠক শেষে প্রদীপ রঞ্জন কর জানান, যাঁদের বন্দিত্বের মেয়াদ তিন বছর অতিক্রান্ত হয়েছে, তাঁদের দুই লাখ রুপির অর্থমূল্যের বন্ড এবং সেই সঙ্গে দুই ভারতীয় নাগরিকদের জামিননামা প্রদানের পর মুক্তি দেওয়া হবে।

আসামে বিদেশি তকমা দিয়ে বাংলাভাষীদের তাড়াতে গিয়ে আসামের বহু বাঙালি হিন্দু-মুসলিমকে বন্দী করা হয়। তাঁদের অনেককেই ঠাঁই দেওয়া হয় আসামের ছয়টি কারাগারে স্থাপিত বিশেষ বন্দিশিবিরে। এই ছয়টি ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দী রয়েছেন এক হাজারের বেশি বাঙালি হিন্দু-মুসলমান। এই বন্দিশিবিরে ইতিমধ্যে ২৭ জন বন্দীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১৩ জন হিন্দু ও ১৩ জন মুসলিম। আরেকজন ভিন্ন সম্প্রদায়ের।