পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবনে সন্ধ্যায় আঘাত হানবে 'বুলবুল'

বুলবুলের প্রভাবে কলকাতায় ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
বুলবুলের প্রভাবে কলকাতায় ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ গতিবেগ বাড়িয়ে এবার ওডিশার উপকূল হয়ে ধেয়ে আসছে পশ্চিমবঙ্গের দিকে। আজ শনিবার সন্ধ্যার দিকে বুলবুল আছড়ে পড়তে পারে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের সাগরদ্বীপ অঞ্চলে। বুলবুলের প্রভাবে গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে কলকাতাসহ ৭ জেলায় শুরু হয়েছে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। বইছে দমকা হাওয়া।

আজ শনিবার সকাল থেকে এই বৃষ্টি আরও বেড়েছে। বেড়েছে দমকা হাওয়া। সাগরদ্বীপের বাসিন্দাদের ইতিমধ্যে সরিয়ে এনেছে রাজ্য সরকার। বাকি এলাকার মানুষজনকেও সরিয়ে আনা হচ্ছে।

কলকাতার আলীপুর আবহাওয়া দপ্তর বলছে, কাল রোববার বুলবুল আঘাত হানার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বুলবুলের গতিবেগ বেড়ে যাওয়ায় শনিবার সন্ধ্যার পর পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

আলীপুর আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তা গণেশ কুমার দাস বলেন, কলকাতা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং ঝাড়গ্রামে কড়া সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

বুলবুল প্রথম আঘাত করতে পারে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সাগরদ্বীপে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় আবহাওয়া দপ্তর থেকে বলা হয়েছিল, সাগরদ্বীপ থেকে ৫৩০ কিলোমিটার দূরে বুলবুল অবস্থান করছে। আজ শনিবার বলা হয়, বুলবুল এখন ৩১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। আজ সন্ধ্যার পর এই বুলবুল আঘাত করবে সাগরদ্বীপ ও বাংলাদেশের খেপুপাড়া এলাকায়। রাতে বুলবুল পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের দিকে গেলে পরিবর্তন হবে আবহাওয়ার। এই বুলবুলের গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার থেকে ১৩৫ কিলোমিটার পর্যন্ত।

রাজ্য সরকার কলকাতার রাজ্য সচিবালয় নবান্নে স্থাপন করেছে একটি কন্ট্রোল রুম। প্রস্তুত রাখা হয়েছে রাজ্যের দুর্যোগ মোকাবিলা দলকে। কলকাতাসহ ৭ জেলার সব বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। আবেদন জানিয়েছে, ওই ৭টি জেলার কলেজ বন্ধ রাখার। পাশাপাশি ওই জেলাগুলোর ইংরেজি মাধ্যম ও বেসরকারি স্কুলও বন্ধ রাখতে আবেদন করা হয়েছে।

সুন্দরবন অঞ্চলের কাকদ্বীপ, সাগর, পাথর প্রতিমা, নামখানা এলাকায় ৬৪টি আশ্রয়শিবির প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গতকাল যাঁরা এই আশ্রয়শিবিরে এসেছেন তাঁদের শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। এসব অঞ্চলে মাইকযোগে বুলবুলের আছড়ে পড়ার কথা বলা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের দীঘা, বকখালি, মন্দারমণি, ফ্রেজারগঞ্জ এলাকায় সরকারের তরফ থেকে মাইকিং করে সমুদ্র তীরে পর্যটক ও স্থানীয় লোকজনের যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সমুদ্রে যাওয়া জেলেদের অবিলম্বে ফিরে আসতে বলা হয়েছে। যদিও দীঘার মৎস্যজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দীঘার মাছ ধরার সব ট্রলার ফিরে এসেছে গতকালই।

কলকাতার মেয়র ফরহাদ হাকিম বলেছেন, ‘কলকাতা পৌরসভা বুলবুল মোকাবিলার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ফণীকে যেমন আমরা মোকাবিলা করেছিলাম এবার বুলবুলকেও মোকাবিলা করব। ফণী যেমন আমাদের প্রস্তুতিতে পালিয়ে গিয়েছিল এবার বুলবুলও পালিয়ে যাবে।’