ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট লুলা মুক্তি পেলেন

কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সমর্থকদের সঙ্গে ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট লুইজ ইন সিও লুলা দা সিলভা। ছবি: এএফপি
কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সমর্থকদের সঙ্গে ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট লুইজ ইন সিও লুলা দা সিলভা। ছবি: এএফপি

ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট লুইজ ইন সিও লুলা দা সিলভা মুক্তি পেয়েছেন। দেড় বছর পর তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন। দুর্নীতির দায়ে পাওয়া সাজা সর্বোচ্চ আদালত খারিজ করে দেওয়ার পর গতকাল শুক্রবার মুক্তি পান তিনি।

আল-জাজিরার এক খবরে বলা হয়েছে, কারাগার থেকে বেরিয়ে আসার সময় হাজারো মানুষ করতালি দিয়ে স্বাগত জানায় লুলাকে। আজ শনিবার সাও পাওলোতে শোভাযাত্রা করবেন লুলা।

ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় কুরিটিবা নগরীর ফেডারেল পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বেরিয়ে আসার সময় কালো টি-শার্ট ও স্যুট–জ্যাকেট পরে ছিলেন ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট লুলা। এ সময় সমর্থকদের উদ্দেশে হাত তুলে বিজয় চিহ্ন দেখান তিনি। প্রতি উত্তরে ওয়ার্কস পার্টির সদস্য এবং সমর্থকেরা তাঁকে ‘ভালোবাসা’র চিহ্ন দেখান। পরে সাংবাদিকেরা লুলাকে ঘিরে ধরেন।

সেখানে বক্তব্যে লুলা দেশের গরিব মানুষের জন্য তাঁর লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বর্তমান প্রেসিডেন্ট চরম ডানপন্থী নেতা জাইর বোলসোনারোর আর্থিক নীতিমালার কঠোর সমালোচনা করেন।

৭৪ বছর বয়সী ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট লুলাকে দ্রুত মুক্তি দেওয়ার জন্য তাঁর আইনজীবীরা আবেদন জানানোর কয়েক ঘণ্টা পর তিনি কারাগার থেকে ছাড়া পেলেন।

২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে সেখানে বন্দী ছিলেন লুইজ ইন সিও লুলা দা সিলভা। দুর্নীতি ও অর্থ পাচার করার দায়ে তিনি প্রায় ৯ বছরের সাজা ভোগ করছিলেন।

বৃহস্পতিবার রাতে সর্বোচ্চ আদালত লুলার বিরুদ্ধে দেওয়া নিম্ন আদালতের সাজা খারিজ করে দেন। এ মামলার কয়েক হাজার আসামির অন্যতম হচ্ছেন লুলা। ৭ নভেম্বর ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্ট এক রুল জারি করে বলেছিলেন, যেসব বন্দী আপিল করার পরেও ব্যর্থ হয়েছেন, কেবল তাঁরাই কারাভোগ করবেন, অন্যদের মুক্তি দেওয়া হবে। সুপ্রিম কোর্টের ওই রুলের পরিপ্রেক্ষিতে সাময়িকভাবে কারামুক্তি পেয়েছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট।

৭৪ বছর বয়সী বামপন্থী নেতা লুইজ ইন সিও লুলা দা সিলভা ২০০৩ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ব্রাজিলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও সম্ভাব্য বিজয়ী হিসেবে জরিপে এগিয়ে ছিলেন তিনি। কিন্তু বড় একটি দুর্নীতির মামলায় বন্দী হওয়ার পর ওই নির্বাচনে জয়ী হন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হন জাইর বোলসোনারো। এর আগেও লুলার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল।

শুরু থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন লুলা দা সিলভা। তাঁর দাবি, তিনি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার। এ কারণে লুলার কারামুক্তিকে সাময়িক বিজয় হিসেবেই দেখছেন তাঁর সমর্থকেরা।

কারাগার থেকে বেরিয়ে লুলা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি ভাবতেও পারিনি ৫৮০ দিন ধরে বৃষ্টি বা ৪০ ডিগ্রির (সেলসিয়াস তাপমাত্রা) মধ্যে যেসব মানুষ শুভসকাল, শুভবিকেল, শুভরাত্রি বলে চিৎকার করেছে, আজ তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারব।’ তিনি সমর্থকদের আশ্বস্ত করেছেন, নিজের নির্দোষ হওয়ার বিষয়টি অবশ্যই আদালতে প্রমাণ করবেন।

লুলার কারামুক্ত জীবন কতটা দীর্ঘ হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ, তাঁর বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি দুর্নীতির মামলা রয়েছে।