লেবাননে চলমান বিক্ষোভে গুলি, নিহত ১
লেবাননের রাজধানী বৈরুতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চলাকালে এক সেনাসদস্যের গুলিতে একজন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। রাজধানীর কাছে উপকূলীয় শহর খালদেতে এ ঘটনা ঘটে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি ছোড়া হয় বলে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়। সে দেশে মাসখানেক সরকারবিরোধী এই বিক্ষোভ চলছে। আজ বুধবার দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
দেশটির জাতীয় বার্তা সংস্থার তথ্যের বরাতে এএফপির খবরে জানানো হয়, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি মারা যান। এই নিয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনে দুজনের মৃত্যু হলো।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, এ ঘটনায় ওই সেনাসদস্যকে আটক করা হয়েছে।
শান্তিপূর্ণ এই বিক্ষোভে অদক্ষ ও দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিককে হটিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন বিক্ষোভকারীরা।
লেবাননের শিয়া মুসলিম সংগঠন হিজবুল্লাহকে সমর্থন দেওয়ায় গত মঙ্গলবার থেকে আন্দোলনের পরিধি বাড়তে শুরু করে। আন্দোলনকারীরা বৈরুত, ত্রিপোলি ও বেকার বড় বড় সড়ক অবরোধ করে।
প্রগ্রেসিভ সোশ্যালিস্ট পার্টির প্রধান ওয়ালিদ জামলাত বলেন, সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত ব্যক্তি তাঁদের সদস্য। তবে তাঁদের সমর্থকদের শান্ত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন ওয়ালিদ।
মঙ্গলবার সকালে বিক্ষোভকারীরা একটি স্বাধীন বিচার বিভাগের দাবিতে বৈরুত আদালতের কাছে জড়ো হন। তাঁরা বিচারপতি ও আইনজীবীদের কাজে যোগ দিতে যাওয়ার সময় বাধা দেন। দুটি প্রধান মোবাইল অপারেটর, আলফা এবং টাচের কর্মচারীরাও দেশব্যাপী ধর্মঘট শুরু করেছেন। দেশটির বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক বন্ধ রয়েছে।
অর্থনৈতিক সংকটের প্রতিবাদে গত ১৭ অক্টোবর থেকে লেবাননে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার ১৩ দিন পর গত ২৯ অক্টোবর দেশটির প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি প্রেসিডেন্ট মিশেল আউনের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার সময় তিনি এটিকে দেশের জন্য খুব বেশি প্রয়োজনীয় ‘ইতিবাচক ধাক্কা’ বলে অভিহিত করেন।
এর আগে সাদ হারিরি প্রেসিডেন্ট আউনের সঙ্গে পরামর্শ করেন এবং সরাসরি হিজবুল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এই গোষ্ঠী নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের পক্ষে। এ ব্যাপারে কীভাবে এগিয়ে যেতে হবে, তা নিয়ে হারিরি তাদের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ার পর তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। পদত্যাগের অর্থ এই নয় যে হারিরি পুরোপুরি শাসকগোষ্ঠী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। বরং এতে তাঁর ফিউচার মুভমেন্ট, হিজবুল্লাহ ও ফ্রি প্যাট্রিয়টিক মুভমেন্ট জোটের মধ্যে ২০১৬ সালে স্বাক্ষরিত রাজনৈতিক চুক্তির পরিধিতে পরিবর্তন আনার অভিপ্রায় প্রতিফলিত হয়েছে। ওই চুক্তিই মিশেল আউনের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথ প্রশস্ত করেছিল।