হংকংয়ে বিক্ষোভে মুখোশধারীদের হামলায় নিহত ১

হংকংয়ে চলতি সপ্তাহে বিক্ষোভ তুঙ্গে উঠেছে। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
হংকংয়ে চলতি সপ্তাহে বিক্ষোভ তুঙ্গে উঠেছে। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

হংকংয়ে সরকারি দলের সমর্থক ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালীন ৭০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি মারা গেছেন। বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, মাথায় ভারী কোনো বস্তু দিয়ে আঘাতের ফলে তিনি নিহত হন। তবে এই হত্যার সঙ্গে চলমান বিক্ষোভের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানায় পুলিশ।

কর্মকর্তারা বলেন, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ওই বৃদ্ধ মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। বিক্ষোভের কিছু ছবিও তোলেন তিনি। এ সময় কালো পোশাক পরা মুখোশধারী বিক্ষোভকারীরা ভারী কিছু দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করলে তিনি মারা যান।

এর আগে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেন, হংকংয়ের ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ পদ্ধতি ‘চ্যালেঞ্জের’ মুখোমুখি হচ্ছে। তাঁর এ কথার পরপরই বুধবার এ হত্যার ঘটনা ঘটল।

হংকংয়ে পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে।

গত সপ্তাহে পুলিশি অভিযানের সময় গাড়ি পার্কের কাছে পড়ে অ্যালেক্স চাউ নামে ২২ বছর বয়সী এক বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থী মারা যান। এ ঘটনার পর হংকংয়ের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।

বুধবার হংকংয়ের সীমান্তবর্তী শহর শেইং শুইয়ে বিক্ষোভ চলাকালীন ওই পরিচ্ছন্নতাকর্মীর মাথায় আঘাত করা হয়। ধারণকৃত ভিডিওতে দেখা গেছে, লোকটি মাথায় আঘাত পাওয়ার পর মাটিতে পড়ে যান। এ সময় দুটি গ্রুপ একে অপরকে লক্ষ্য করে ইট ছুড়ে মারছিল।

এক পুলিশ সুপার বার্তা সংস্থা এসসিএমপিকে জানান, নিহত ব্যক্তি এই প্রতিবাদের সঙ্গে জড়িত নন। তিনি শুধু ঘটনাস্থলের ছবি তুলছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

খাদ্য ও পরিবেশগত স্বাস্থ্য অধিদপ্তর (এফএইচডি) জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তি তাদের অস্থায়ী কর্মী ছিলেন। মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে তিনি বাইরে এসেছিলেন। এফএইচডি মুখোশধারী বিক্ষোভকারীদের সমালোচনা করে বলেন, এ ধরনের আন্দোলনকারীরা অত্যন্ত বিপজ্জনক।

এফএইচডি এক বিবৃতিতে বলে, আন্দোলনকারীরা পরপর তিন দিন বিভিন্ন এলাকায় সহিংস হামলা চালিয়েছে। সেখানে তারা জনসাধারণের ওপর ইচ্ছাকৃতভাবে হামলা চালায়। তাদের এ ধরনের আচরণ হতাশাজনক।

চলতি সপ্তাহে হংকংয়ে সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে। রাস্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। হংকংয়ের আর্থিক কেন্দ্রস্থলে মধ্যাহ্নভোজের সময় বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নেয়। গত সোমবার এক পুলিশ কর্মকর্তা আন্দোলনরত এক কর্মীকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে সহিংসতা আরও বেড়ে যায়। সেদিনই বিক্ষোভকারীরা সরকারের এক সমর্থকের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।

ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় ব্রিকসের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য দেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। এ সময় তিনি প্রতিবাদকারীদের কঠোরভাবে সতর্ক করেন। তিনি বলেন, শহরে হিংসাত্মক কার্যক্রম মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এই অবস্থা ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’র নীতিকে গুরুতরভাবে ‘চ্যালেঞ্জ’ করছে।