আসামের আরও ১৫ 'বিদেশি'কে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত

এনআরসি
এনআরসি

আসামের কারাগারে স্থাপিত ডিটেনশন ক্যাম্প বা বন্দিশিবিরে ‘বিদেশি’ তকমা লাগিয়ে গ্রেপ্তার করা বন্দীদের মধ্য থেকে আরও ১৫ জনকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আসামের বিজেপি সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এর আগে এ মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রথম দফায় ৫৬ জন বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়।

সম্প্রতি ভারতের সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন, যেসব বন্দীর বন্দিশিবিরে আটক থাকার মেয়াদ ৩ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে, সেই সব বন্দীকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। কারাগারে ৩ বছর পার করায় এই ১৫ জনকে মুক্তি দিতে সম্মতি জানিয়েছে আসাম সরকার। তাঁরা বর্তমানে তেজপুর ডিটেনশন ক্যাম্পে আছেন। আগে মুক্তি দেওয়া ৫৬ জন ছিলেন গোয়ালপাড়া বন্দিশিবিরে।

আসামে বিদেশি তকমা দিয়ে বাংলাভাষীদের তাড়াতে গিয়ে বন্দী করা হয় আসামের বহু বাঙালি হিন্দু-মুসলিমকে। তাঁদের অনেককেই ঠাঁই দেওয়া হয় আসামের ৬টি কারাগারে স্থাপিত বিশেষ বন্দিশিবির বা ডিটেনশন ক্যাম্পে। এই বন্দিশিবিরগুলো রয়েছে আসামের তেজপুর, গোয়ালপাড়া, শিলচর, ডিব্রুগড়, কোকরাঝাড় ও জোরহাট জেলায়।

জানা গেছে, এই ৬টি ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দী রয়েছেন এক হাজারের বেশি বাঙালি হিন্দু-মুসলমান। এর মধ্যে ৩ বছরের বেশি সময় বন্দী রয়েছেন ৩০৫ জন।

এই বন্দীদের মুক্তির দাবিতে আসামের বাঙালি যুব-ছাত্র ফেডারেশন রাজ্যব্যাপী আন্দোলন গড়ে তুললে সম্প্রতি তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন আসাম পুলিশের স্পেশাল ডিজিপি ভাস্কর জ্যোতি মহন্ত ও সীমান্ত পুলিশের শীর্ষ কর্তারা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাঙালি যুব-ছাত্র ফেডারেশনের চেয়ারম্যান প্রদীপ রঞ্জন কর, সভাপতি দীপক দেবসহ কমিটির অন্য নেতারা। সেখানেই বন্দীদের তালিকা, তাঁদের আবেদন এবং কারাবন্দীর মেয়াদ পর্যালোচনা করে প্রথম দফায় ৫৬ বন্দীর মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

বৈঠক শেষে ফেডারেশনের চেয়ারম্যান প্রদীপ রঞ্জন কর জানান, যাঁদের বন্দিত্বের মেয়াদ ৩ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে তাঁদের ২ লাখ রুপি অর্থমূল্যের বন্ড প্রদানের পর মুক্তি দেওয়া হবে।

দ্বিতীয় দফায় এবার ১৫ জনকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আসাম সরকার। বাকি বন্দীদের কাগজপত্র ঠিকঠাকভাবে জমা হলে পরবর্তী সময়ে তাঁদেরও মুক্তি দেওয়া হতে পারে। আসাম সরকারের দাবি, বন্দীরা বাংলাদেশি।

বন্দিশিবিরে ইতিমধ্যে ২৭ বন্দীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বর্তমান বিজেপি সরকারের আমলে। মৃতদের মধ্যে ১৩ জন হিন্দু ও ১৩ জন মুসলিম। আর অন্যজন অন্য সম্প্রদায়ের।