অভিবাসন নীতি নিয়ে যুক্তরাজ্যের নির্বাচনী মাঠে প্রধান দুই দল

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন। ফাইল ছবি
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন। ফাইল ছবি

যুক্তরাজ্যে সাধারণ নির্বাচনে বরাবরই ‘অভিবাসন’ গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে হাজির হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আনুষ্ঠানিক ইশতেহার প্রকাশের আগেই গত রোববার অভিবাসন নীতি নিয়ে প্রচারণা সরগরম ছিল দলগুলো।

ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি অভিবাসন নীতিতে সমতা আনার ঘোষণা দিয়েছে। রোববার প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, ব্রেক্সিট কার্যকরের পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং ইইউবহির্ভূত সবার জন্য সমান অভিবাসন নীতি কার্যকর করবে তাঁর দল। অস্ট্রেলিয়ার আদলে পয়েন্টভিত্তিক ব্যবস্থা চালু করবে এবং সার্বিক অভিবাসন কমিয়ে আনবে। তিনি বলেন, সব অভিবাসীকে জাতীয় স্বাস্থ্যসেবার জন্য (হেলথ সারচার্জ) বছরে ৬২৫ পাউন্ড সারচার্জ দিতে হবে। যুক্তরাজ্যের বাসিন্দাদের করের অর্থে পরিচালিত স্বাস্থ্যসেবার সুবিধা অভিবাসীরা গ্রহণ করুক বা না করুক, আগমনের প্রথম দিন থেকে এই সেবার জন্য অভিবাসীদের অবদান নিশ্চিত করা যৌক্তিক। ক্ষমতায় ফিরলে ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে এ নিয়ম চালু করা হবে।

বর্তমানে ইইউবহির্ভূত দেশের নাগরিকদের যুক্তরাজ্যের ভিসা আবেদনের জন্য বড় অঙ্কের ভিসা ফির পাশাপাশি প্রতিবছর ৪০০ পাউন্ড (প্রায় ৪৫ হাজার টাকা) হেলথ সারচার্জ দিতে হয়। কিন্তু ইইউভুক্ত দেশের নাগরিকদের যুক্তরাজ্যে বসতি গড়তে ভিসার আবেদন করতে হয় না। হেলথ সারচার্জও দিতে হয় না।

অন্যদিকে, প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টি অভিবাসনের সুযোগ বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে। রোববার বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন বলেন, যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি উৎপাদন—সবকিছুই অভিবাসী কর্মীদের ওপর নির্ভরশীল। তাই তাঁর দলের নীতি হবে অভিবাসীবান্ধব। বর্তমানে অভিবাসীদের পরিবার আনার ক্ষেত্রে আয়ের যে শর্ত রয়েছে, সেটি দূর করে নিয়ম শিথিল করার ঘোষণা দেন তিনি। ব্রেক্সিটের পর ইইউ নাগরিকদের অবাধ প্রবেশাধিকার বন্ধ করবেন কি না, সে বিষয়টি স্পষ্ট করেননি করবিন। তিনি বলেন, তাঁর আমলে অভিবাসীদের অনেক বিচরণ ঘটবে।

লেবার পার্টির অভিবাসন নীতির সমালোচনা করে কনজারভেটিভ দল বলছে, করবিনের অধীনে যুক্তরাজ্যে বার্ষিক মোট অভিবাসন বর্তমানের আড়াই লাখ থেকে বেড়ে ৮ লাখ ৫০ হাজারে পৌঁছাবে। কনজারভেটিভের এমন দাবি মিথ্যা আখ্যায়িত করে লেবার বলছে, আগামী বৃহস্পতিবার দলটি তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করবে। সেখানে লেবার দলের সব নীতির পূর্ণাঙ্গ হিসাব থাকবে।

ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ কার্যকর করতে ব্যর্থ হয়ে মধ্যবর্তী নির্বাচনের পথ বেছে নেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। আগামী ১২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে এ নির্বাচন।