সরাসরি বিতর্কের আগেই আক্রমণে বরিস

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন। ফাইল ছবি
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন। ফাইল ছবি

সরাসরি বিতর্কে অংশ নেওয়ার আগেই প্রতিদ্বন্দ্বী লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিনকে ঘায়েল করতে অভিনব পথ বেছে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। বিতর্কের প্রায় ২৪ ঘণ্টা আগে করবিনকে লেখা এক চিঠিতে ব্রেক্সিট নিয়ে (ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ) অবস্থান স্পষ্ট করতে কিছু প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন তিনি। চিঠিতে বরিস দাবি করেন, এ পর্যন্ত প্রচারণায় লেবার নেতা প্রশ্নগুলোর সরাসরি জবাব না দিয়ে লুকোচুরি খেলেছেন।

বিতর্কে হাজির হওয়ার আগে এমন চিঠি ব্রেক্সিট কার্যকরের পক্ষে বরিসের জোরালো অবস্থানকে আরেক দফা সরব করিয়ে দিল। আগামী ১২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচন সামনে রেখে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী নেতার মধ্যে সরাসরি বিতর্কের আয়োজন করে বাণিজ্যিক টেলিভিশন চ্যানেল আইটিভি। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত আটটায় দুই নেতা মুখোমুখি হওয়ার কথা।

বাম ধারার রাজনীতিক করবিন দলীয় কোন্দলের কারণে ব্রেক্সিটের পক্ষে কিংবা বিপক্ষে কোনো অবস্থান স্পষ্ট করতে পারেননি। করবিন বলেছেন, লেবার ক্ষমতায় গেলে ইইউর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বাণিজ্য সম্পর্ক বজায় রেখে তিন মাসের মধ্যে নতুন চুক্তি করবেন। ছয় মাসের মধ্যে গণভোট আয়োজন করে ওই চুক্তির মাধ্যমে বিচ্ছেদ কিংবা ইইউতে থেকে যাওয়া এই দুই বিকল্পের মধ্যে বেছে নেওয়ার সুযোগ দেবেন জনগণকে। কিন্তু তাঁর দলের শতাধিক প্রার্থী ব্রেক্সিটবিরোধী এক অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করে বলেছে, নির্বাচিত হলে তাঁরা ব্রেক্সিট বাতিল করতে প্রয়োজনীয় সবকিছু করবেন।

বিপরীতে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরে দ্রুততম সময়ে ব্রেক্সিট কার্যকর করতে চান বরিস জনসন। এ জন্য নির্বাচিত হলে ব্রেক্সিট কার্যকরের পক্ষে সরকারি পরিকল্পনায় সমর্থন দেবে—এমন অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করতে হয়েছে কনজারভেটিভ পার্টির সব প্রার্থীকে।

ব্রেক্সিট প্রশ্নে করবিনের দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের কৌশল নিয়েছেন ডানপন্থী কনজারভেটিভ পার্টির নেতা বরিস জনসন। চিঠির শুরুতে বরিস বলেন, পার্লামেন্টের অচলাবস্থা কাটিয়ে ব্রেক্সিট কার্যকর করার জন্যই এই নির্বাচন। এই নির্বাচনের বড় ইস্যুগুলোতে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী দুই নেতার অবস্থান সম্পর্কে জানা জনগণের অধিকার।

চিঠিতে চারটি ভিন্ন প্রশ্নে বরিস জানতে চেয়েছেন, ‘আপনি পুনরায় গণভোটের প্রস্তাব করেছেন, সেই গণভোটে আপনি ব্রেক্সিটের পক্ষে থাকবেন নাকি বিপক্ষে থাকবেন? আপনার অধীনে ইইউ নাগরিকদের অবাধ চলাচল বন্ধ হবে, বজায় থাকবে নাকি আরও বৃদ্ধি পাবে? সার্বিক অভিবাসন কমবে নাকি বাড়বে? ইইউর একক বাজারের সুবিধা ধরে রাখার বিনিময়ে আপনি ইইউর বাজেটে বছরে কত অর্থ দিতে প্রস্তুত? লেবার পার্টির সব প্রার্থী আপনার ব্রেক্সিট নীতি সমর্থন করবে—এমন নিশ্চয়তা কি দিতে পারবেন?

এসব প্রশ্নের জবাবে করিবন কী বলেন, এখন সেটিই দেখার অপেক্ষা।

প্রসঙ্গত, লেবার পার্টির প্রার্থীদের ব্রেক্সিটবিরোধী অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তিন প্রার্থী রুশনারা আলী, রূপা হক ও টিউলিপ সিদ্দিক রয়েছেন। এই তিন প্রার্থীর আসনের বেশির ভাগ লোক ২০১৬ সালের গণভোটে ব্রেক্সিটের বিরুদ্ধে ছিলেন।