আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের পক্ষে লড়বেন সু চি

মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি
মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি

রোহিঙ্গা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে দায়ের হওয়া মামলায় দেশটির পক্ষে আইনি লড়াইয়ের জন্য টিম গঠিত হয়েছে। সেই টিমের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি। আজ বুধবার সু চির দপ্তরের ফেসবুক পেজে এ কথা জানানো হয়েছে।

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া রোহিঙ্গা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সম্প্রতি ওই মামলা করে। মুসলিম দেশগুলোর সংগঠন ওআইসি এতে সমর্থন দিচ্ছে।

সু চির দপ্তরের ফেসবুক পেজে বলা হয়, গাম্বিয়ার করা মামলা মোকাবিলার জন্য মিয়ানমার প্রখ্যাত আন্তর্জাতিক আইনজীবীদের নিয়োজিত করছে। আইনজীবীদের দলের নেতৃত্ব দেবেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর ও কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সু চি। মিয়ানমারের জাতীয় স্বার্থের পক্ষে আন্তর্জাতিক আদালতে (আইসিজে) লড়বেন তিনি।

এ দিকে গত সপ্তাহে আর্জেন্টিনার আদালতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর হুমকি সৃষ্টির অভিযোগে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি, সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইংসহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো। রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতার অভিযোগে এই প্রথমবারের মতো সু চিকে কাঠগড়ায় আনার পদক্ষেপ মিয়ানমারের রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভাবমূর্তিকে আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রশ্নবিদ্ধ করল।

নেদারল্যান্ডসের একটি কূটনৈতিক সূত্র মঙ্গলবার প্রথম আলোকে জানিয়েছে, মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা করার এক মাসের মধ্যে আইসিজে এ বিষয়ে শুনানি ডেকেছে। আগামী ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর এ নিয়ে গাম্বিয়া ও মিয়ানমার দুই দফা শুনানি ও পাল্টা-শুনানিতে অংশ নেবে। এর মধ্য দিয়ে মোটামুটি দ্রুততম সময়ের মধ্যেই বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হলো।

ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, আইসিসির বিচার-পূর্ব ট্রাইব্যুনালে তদন্তের অনুমতির পর আদালতের কর্মকর্তারা আগামী মাসে বাংলাদেশে কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন। কাজের প্রক্রিয়াগত বিষয়গুলো সুরাহার জন্য গত সপ্তাহে আইসিসি বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে। কক্সবাজার ও ঢাকায় দপ্তর চালু করে স্বাধীনভাবে তদন্তের কাজটি করবে আইসিসি।

২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামে দেশটির সেনাবাহিনী। নির্বিচার হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন থেকে বাঁচতে পরের কয়েক মাসে অন্তত সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।