সেই 'রহস্যময়' রকেট আনবেই রাশিয়া

ছবিটি প্রতীকী। ছবি: এএফপি
ছবিটি প্রতীকী। ছবি: এএফপি

বেশ কিছুদিন ধরেই এক ‘রহস্যময়’ রকেট আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। সেই চেষ্টা চলাকালীন গত আগস্টে ভয়াবহ এক বিস্ফোরণে প্রাণ হারান সাতজন। ভয়ংকর এই দুর্ঘটনার পরও রাশিয়া এই প্রকল্প অব্যাহত রাখবে কি না, সে বিষয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। তবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিশ্চিত করেছেন, যেকোনো কিছুর মূল্যে এই রকেট রাশিয়া আনবেই।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার ক্রেমলিনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ওই রহস্যময় রকেট বিস্ফোরণে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের হাতে মরণোত্তর পদক তুলে দেন পুতিন। সেখানেই এই রকেট প্রকল্প অব্যাহত রাখার কথা বলেন তিনি।

নতুন প্রযুক্তির রকেট আনার নিশ্চয়তা দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এএফপি
নতুন প্রযুক্তির রকেট আনার নিশ্চয়তা দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এএফপি

নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের উদ্দেশে পুতিন বলেন, ‘যা-ই হোক না কেন, আমরা অবশ্যই একে নিখুঁতভাবে তৈরি করব। পৃথিবীতে শান্তি নিশ্চিত করার জন্য এ রকম অনন্য প্রযুক্তির অস্ত্রের অবশ্যই প্রয়োজন আছে।’ রকেটটি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু না জানালেও পুতিন জানিয়েছেন, এই রকেটে যে প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে, তা পৃথিবীর ইতিহাসে আগে কখনো দেখা যায়নি।

গত ৮ আগস্ট রুশ নৌবাহিনীর একটি পরীক্ষা কেন্দ্রে রকেটটির ইঞ্জিন বিস্ফোরিত হয়ে পাঁচজন প্রকৌশলীসহ মোট সাতজন নিহত হন। এ ছাড়া গুরুতর আহত হন আরও ছয়জন। রাশিয়ার পরমাণু সংস্থা রোসাটম জানায়, বিস্ফোরণ এতটাই ভয়াবহ ছিল যে তার কারণে প্রকৌশলীরা সমুদ্রে ছিটকে পড়েছিলেন। বিস্ফোরণের পরপর নিকটবর্তী বড় শহর সেভেরদভিনস্কে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় ১৬ গুণ বেড়ে যায়। পরে ওই এলাকায় কঠোর গোপনীয়তার সঙ্গে উদ্ধার ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হয়।

যে রকেট নিয়ে এত আলোচনা, সেটি সম্পর্কে এখন পর্যন্ত বিস্তারিত কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি রাশিয়া। যে কারণে রকেটটি নিয়ে জল্পনাকল্পনা চলছেই। রাশিয়া কেবল এতটুকু নিশ্চিত করেছে যে, রকেটটির ইঞ্জিন পরিচালিত হবে পারমাণবিক শক্তির সাহায্যে। গুঞ্জন ছিল, অ্যান্টি-শিপ মিসাইল কিংবা পানির নিচ থেকে আক্রমণে সক্ষম ড্রোন তৈরির জন্য পরীক্ষা চালাচ্ছে রাশিয়া। তবে রাশিয়া ও পাশ্চাত্য দেশগুলোর বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ‘নাইনএম৩৭০ বুরেভেস্টনিক’ নামের একটি মিসাইল তৈরির জন্যই এত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে রাশিয়া। ন্যাটো এ ধরনের রকেটকে বলে থাকে ‘স্কাইফল’।

প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, এই মিসাইলে (মতান্তরে রকেট) কোনো বাঁধাধরা সীমা থাকবে না। অর্থাৎ যেকোনো দূরত্বের লক্ষ্য ধ্বংস করতে পারবে এই ক্ষেপণাস্ত্র।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, রাশিয়ার এই নতুন অস্ত্র প্রতিশোধমূলক অভিযানে কাজে দেবে। মূলত পারমাণবিক হামলার পর প্রতিশোধমূলক হামলা চালাতে এই নতুন প্রযুক্তির অস্ত্র ব্যবহার করা যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।