কারাগারে বসেই সাড়ে ৮ কোটি টাকা চুরি

জালিয়াতি করে ১০ লাখ মার্কিন ডলার হাতিয়ে নিয়েছেন ২৪ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হোপ ওলুসেগুন আরোকে। ছবি: নাইজেরিয়ার ইকোনমিক অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইমস কমিশনের সৌজন্যে
জালিয়াতি করে ১০ লাখ মার্কিন ডলার হাতিয়ে নিয়েছেন ২৪ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হোপ ওলুসেগুন আরোকে। ছবি: নাইজেরিয়ার ইকোনমিক অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইমস কমিশনের সৌজন্যে

৯ বছর আগে জালিয়াতি মামলায় গ্রেপ্তার হন হোপ ওলুসেগুন আরোকে নামের এক ব্যক্তি। ২৪ বছরের জেলও এখন খাটছেন তিনি। কিন্তু এর মধ্যেই তিনি অভাবনীয় এক কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছেন। ইন্টারনেটে জালিয়াতির মাধ্যমে কারাগারে বসেই ১ মিলিয়ন বা ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরি করে ফেলেছেন তিনি, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা!

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিনব এই চুরির ঘটনা ঘটেছে নাইজেরিয়ায়। কারাগারে সর্বোচ্চ নিরাপত্তাব্যবস্থার মধ্যে থেকেও কীভাবে এত বড় অঙ্কের অর্থ চুরি করলেন আরোকে, সেটি নিয়ে রীতিমতো বিস্মিত গোটা নাইজেরিয়া। এ ঘটনায় আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা।

নাইজেরিয়ার ইকোনমিক অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইমস কমিশন (ইএফসিসি) গত মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এরই মধ্যে গোয়েন্দাদের কাছে এই জালিয়াতিসংক্রান্ত সব তথ্য পাঠানো হয়েছে। কারাগারের এমন উচ্চ নিরাপত্তার ভেতরে থেকেও কীভাবে এই কাজ করলেন আরোকে, সেটি তাদের কাছেও রহস্য হয়ে আছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, কারাগারে বসেও অবাধে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহার করতেন আরোকে। প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে ইএফসিসি জানিয়েছে, প্রচলিত নিয়মের বাইরে গিয়ে তাঁকে কারাগারে ফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কোনো এক অজ্ঞাত অসুখের কারণে তাঁকে লাগোসের নাইজেরিয়া পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি সেখান থেকে বের হয়ে বিলাসবহুল হাসপাতালে থাকতেন, স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতেন। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানেও যোগ দিয়েছেন তিনি।

ইএফসিসি আরও জানিয়েছে, কারাগারে বসে ভুয়া নামে দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন আরোকে। কারাগারে থাকা অবস্থাতেই একাধিক বিলাসবহুল বাড়ি-গাড়ি কিনেছেন। কারাগারে বসেই অবাধে স্ত্রীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থও পাঠিয়েছেন। কেন তাঁকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল এবং কীভাবে তিনি হাসপাতালের পাহারা ভেদ করে বাইরে বের হতেন, সে বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে গোয়েন্দা বিভাগ।

নাইজেরিয়ার সাধারণ লোকজন বলছেন, কারা কর্তৃপক্ষের সাহায্য ছাড়া আরোকের পক্ষে এমন জালিয়াতি করা সম্ভব না। কম বেতন পাওয়া কারা কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে সহজেই নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিল করে নেন আসামিরা, এমন অভিযোগও করছেন অনেকে। তবে এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় সন্দেহভাজন কোনো কারা কর্মকর্তাকে আটক করা হয়নি।