অভিবাসন নিয়ে কড়া বার্তা ব্রেক্সিট পার্টির

যুক্তরাজ্যের অভিবাসন কমানো নিয়েই কট্টর ডানপন্থী রাজনীতিক নাইজাল ফারাজের সংগ্রাম চলমান রয়েছে। তাঁর দৃষ্টিতে রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম থেকে শুরু করে স্কুলে আসন ঘাটতিসহ সব সমস্যার মূলে অভিবাসীরা। তাই তাঁর দল ব্রেক্সিট পার্টির নির্বাচনী ইশতেহারে অভিবাসন নিয়ে কড়া বার্তা থাকবে, এমনটা প্রত্যাশিতই ছিল।

১২ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচন সামনে রেখে আজ শুক্রবার ব্রেক্সিট পার্টির পরিকল্পনা ঘোষণা করেন নাইজেল ফারাজ। তাঁর ঘোষিত পরিকল্পনা অনুযায়ী, ব্রেক্সিট পার্টির লক্ষ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে যুক্তরাজ্যের পূর্ণাঙ্গ বিচ্ছেদ নিশ্চিত করা। ইইউ নাগরিকদের অবাধ প্রবেশাধিকার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা এবং যুক্তরাজ্যে স্থায়ী অভিবাসী বছরে ৫০ হাজারের নিচে নামিয়ে আনা। তবে স্থায়ী অভিবাসী বলে ফারাজ কী বুঝিয়েছেন, সেটি এখনো স্পষ্ট নয়। অভিবাসীর হার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে চান কট্টর ডানপন্থী এই নেতা।

নির্বাচন সামনে রেখে দলগুলো সাধারণত ইশতেহার ঘোষণা করে। কিন্তু নাইজেল ফারাজ বলেছেন, তাঁর ঘোষিত পরিকল্পনা নির্বাচনী ইশতেহার নয়, এগুলো ব্রিটিশ জনগণের সঙ্গে ব্রেক্সিট পার্টির চুক্তি।

ব্রেক্সিট কার্যকর করা নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সৃষ্ট অচলাবস্থার কারণে দেশটিতে এই মধ্যবর্তী নির্বাচন। তাই এই নির্বাচনের প্রধানতম ইস্যু ‘ব্রেক্সিট’। আর সে কারণেই এই নির্বাচনে কট্টর ইইউ-বিরোধী নাইজেল ফারাজের ‘ব্রেক্সিট পার্টি’ অন্য রকম গুরুত্ব পাচ্ছে। নির্বাচনে ব্রেক্সিটপন্থীদের প্রতিনিধিত্ব করা নিয়ে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির সঙ্গে ব্রেক্সিট পার্টির টানাপোড়েন রয়েছে। নিজে প্রার্থী না হলেও ছয় শতাধিক আসনে ব্রেক্সিট পার্টির প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন ফারাজ। কনজারভেটিভের সঙ্গে গোপন সমঝোতার পর মাত্র ২৭৫ আসনে প্রার্থী দিয়েছেন তিনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত নাইজেল ফারাজ বলেন, ব্রেক্সিট কার্যকর হওয়ার পরও তিনি ইইউর প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছেদের আগ পর্যন্ত লড়াই করে যাবেন।

এদিকে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি এখনো নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেনি। দলটি শুক্রবার জানিয়েছে, ইংল্যান্ডে বাড়ি ক্রয়ের ক্ষেত্রে বিদেশিদের ওপর ৩ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক (স্ট্যাম্প ডিউটি) আরোপ করবে তারা। প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টি নিজেদের ইশতেহারের পক্ষে জোর প্রচারণা চালাচ্ছে।

শুক্রবার রাতে প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতাদের বিবিসি আয়োজিত টিভি বিতর্কে অংশ নেওয়ার কথা। সেখানে কনজারভেটিভ নেতা বরিস জনসন, লেবার নেতা জেরেমি করবিন, লিবারেল ডেমোক্র্যাট (লিবডেম) দলের নেতা জো সুইনসন ও স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির (এসএনপি) নেতা নিকোলা স্টারজিয়ন আলাদাভাবে ৩০ মিনিট করে দর্শকদের সরাসরি প্রশ্নের জবাব দেবেন।

অন্যদিকে কেবল জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিষয়ে দলগুলোর নীতি-আদর্শ মূল্যায়নে একটি টিভি বিতর্কের আয়োজন করেছে চ্যানেল ফোর। নেতাদের মতামতের ওপর আসছে সপ্তাহের যেকোনো দিন এই আয়োজন করতে চায় তারা। লেবার, লিবডেম, এসএনপি এবং গ্রিন পার্টি এই বিতর্কে অংশগ্রহণ করবে বলে ইতিমধ্যে নিশ্চিত করেছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী জনসন এই আমন্ত্রণে এখনো সাড়া দেননি। জনসন অংশ না নিলে তাঁর চেয়ার খালি রেখেই বিতর্ক চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে চ্যানেল ফোর।