আটক ৬১ বাংলাভাষীকে আপাতত পুশব্যাক নয়

হাওড়া স্টেশনে আসা আটক বাংলাভাষীদের কয়েকজন। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
হাওড়া স্টেশনে আসা আটক বাংলাভাষীদের কয়েকজন। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরু শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে আটক ৬১ জন বাংলাভাষীকে আপাতত পুশব্যাক করে বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে না।

আটক ৬১ জনকে গতকাল শনিবার পুশব্যাক করার কথা ছিল। তবে পরে পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণে তা বাতিল করা হয়। আটক ব্যক্তিরা এখন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের হেফাজতে আছেন।

গত শুক্রবার ৬১ জন বাংলাভাষীকে ট্রেনে করে বেঙ্গালুরু থেকে কলকাতায় পাঠানো হয়। বেঙ্গালুরু পুলিশ কর্ণাটকের অনন্তপুর জেলা থেকে হাওড়াগামী একটি ট্রেনে তাঁদের তুলে দেয়। গতকাল বিকেলে তাঁরা হাওড়া স্টেশনে পৌঁছান। রাজ্য পুলিশ তাঁদের আপাতত বাংলাদেশে না পাঠিয়ে রাজ্যে আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তাঁদের পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় রাখা হয়েছে।

এই বাংলাভাষীদের বাংলাদেশে পাঠানোর প্রতিবাদে গতকাল বিকেলে হাওড়া স্টেশনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে মানবাধিকার সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রোটেকশন অব ডেমোক্রেটিক রাইটস (এপিডিআর)। তাঁরা স্লোগানে বলেন, ‘বেআইনি পুশ ব্যাক করা হচ্ছে কেন, কেন্দ্র-রাজ্য জবাব দাও?’

এপিডিআরের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নিশা বিশ্বাস বলেন, ‘তাঁরা (আটক ব্যক্তিরা) বাংলাদেশ না ভারত—কোন দেশের নাগরিক, তা নির্ধারিত হয়নি। তাহলে কেন তাঁদের এভাবে বাংলাদেশে পাঠানো হবে? যদি তাঁরা বাংলাদেশের নাগরিকও হন, তবে কেন তাঁদের আইনি প্রক্রিয়ায় আদালতের মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে না? এভাবে পাঠানো বেআইনি?’

বাংলাভাষীদের পুশব্যাক করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
বাংলাভাষীদের পুশব্যাক করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

এ বিষয়ে পরে রাজ্য প্রশাসন জানায়, বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবে। এই সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ৬১ জন বাংলাভাষীকে রাখা হবে রাজ্য সরকারের তত্ত্বাবধানে।

রাজ্য প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, ‘এভাবে তো তাঁদের রাস্তায় ফেলে রাখা যায় না? তাই মানবিক কারণে রাজ্য সরকার তাঁদের এই রাজ্যে ঠাঁই দিয়েছে।’

৬১ জনের মধ্যে ২৬ জন পুরুষ, ২৫ জন নারী ও ১০টি শিশু। তাঁদের অনেকেই বেঙ্গালুরু শহরে কাগজকুড়ানি, দিনমজুরি ও পরিচারিকার কাজ করতেন। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরেই বেঙ্গালুরুতে বসবাস করে আসছিলেন।

বেঙ্গালুরু পুলিশের দাবি, আটক ব্যক্তিরা সবাই বাংলাদেশি। তাঁদের কাছে ভারতের নাগরিকত্বের কোনো কাগজপত্র পাওয়া যায়নি।

এর আগে বেঙ্গালুরু পুলিশ প্রথম দফায় ৮২ জনকে বাংলাদেশে বিভিন্ন সীমান্ত পথে ফেরত পাঠিয়েছিল।