হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থীদের বড় সাফল্য

বিপুল বিজয়ের সংবাদে গণতন্ত্রপন্থীদের উল্লাস। ছবি: এএফপি
বিপুল বিজয়ের সংবাদে গণতন্ত্রপন্থীদের উল্লাস। ছবি: এএফপি

হংকংয়ের স্থানীয় পরিষদ বা ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিল নির্বাচনে গণতন্ত্রপন্থীরা বিপুল বিজয় পেয়েছেন। স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৮টি ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের মধ্যে ১৭টিই এখন গণতন্ত্রপন্থীদের নিয়ন্ত্রণে। কয়েক মাস ধরে চলে আসা বিক্ষোভ-সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনটি ছিল সরকারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নির্বাচন। চীন সরকার মনে করেছিল, এই নির্বাচনে তাদের ভাষায় ‘নীরব সংখ্যাগরিষ্ঠরা’ জিতবে। কিন্তু বাস্তবে উল্টোটাই হয়েছে। বেইজিংপন্থী অনেক প্রার্থী নির্বাচনে হেরে গেছেন। এবারের নির্বাচনে হেরে যাওয়া চীনপন্থী এক কাউন্সেলর জুলিয়ান হু বলেছেন, ‘সবকিছু একেবারে উল্টেপাল্টে গেছে।’

এ নির্বাচন কেন গুরুত্বপূর্ণ
হংকংয়ের ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলরদের রাজনৈতিক ক্ষমতা খুব কম। স্থানীয় কিছু বিষয় যেমন বাস রুট কিংবা আবর্জনা পরিষ্কারের মতো বিষয় নিয়েই তাঁদের কাজ করতে হয়। সেই অর্থে এ নির্বাচনের ফলে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন হবে না। তবে এই প্রথম গণতন্ত্রপন্থীরা ব্যালট বাক্সের মাধ্যমে হংকংয়ের চিফ অ্যাক্সিকিউটিভ ক্যারি লামের প্রতি তাঁদের সমর্থন জানাতে পারলেন। ক্যারি লাম বাতিল হওয়া প্রত্যর্পণ আইনের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছিলেন। আইনটিকে ঘিরে হংকংয়ে কয়েক মাস ধরে ব্যাপক সহিংসতা চলছে।

ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সেলর নির্বাচিত ১১২ সদস্য ১২০০ সদস্যের কমিটির অন্তর্ভুক্ত হবেন। এই কমিটি আবার চিফ অ্যাক্সিকিউটিভ নির্বাচনের জন্য ভোট দেয়। আর ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের এ নির্বাচনের ফলে গণতন্ত্রপন্থীদের একটা বড় জায়গা তৈরি হলো। এবারের নির্বাচনে ৪১ লাখ ভোটার নিবন্ধন করেছিলেন। এটি মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি। নির্বাচনে এবার ৭১ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন। ২০১৫ সালে ভোটারের সংখ্যা ছিল ৪৭ শতাংশ।

কয়েক মাসের অব্যাহত সংঘাতের পর গত সপ্তাহ ছিল অপেক্ষাকৃত শান্ত। কয়েক মাস ধরে অব্যাহতভাবে চলা সহিংসতা ও পুলিশের হামলায় অনেক বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন। বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের ওপর চড়াও হয়েছেন বিক্ষোভকারীরা এবং সরকারপন্থীদের সঙ্গে তাঁদের সংঘাত হয়েছে একাধিকবার।

গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারীদের পেছনে কত মানুষের সমর্থন আছে, তা এখনো পরিষ্কার না। সরকার বারবার বলছে যে বিক্ষোভকারীদের পেছনে খুব কমসংখ্যক মানুষের সমর্থন আছে। অনেক জেলায় এই প্রথমবারের মতো অংশ নেওয়া তরুণ প্রতিদ্বন্দ্বীরা নির্বাচিত হয়েছেন। এঁদের অনেকে বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

ভোটের পর হংকংয়ের চিফ অ্যাক্সিকিউটিভ ক্যারি লাম বলেন, ‘অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির মুখে আমি সন্তুষ্টির সঙ্গে জানাই, আজকের নির্বাচনের দিনটিতে আমরা তুলনামূলকভাবে শান্ত ও শান্তির পরিবেশে ছিলাম।’