আসামে ২৮ 'বিদেশির' মৃত্যু: বিজেপি সাংসদ

এনআরসি
এনআরসি

ভারতের আসাম রাজ্যের বন্দিশিবিরে আটক ‘বিদেশিদের’ মধ্যে ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার ভারতের সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই এ কথা বলেন।

আসামের ৬টি বন্দিশিবির বা ডিটেনশন ক্যাম্পে এখন ৯৮৮ জন ‘বিদেশি’বন্দী রয়েছেন। আসামে বিদেশি তকমা দিয়ে বাংলাভাষীদের তাড়াতে গিয়ে বন্দী করা হয় এই সব মানুষকে। এই বন্দিশিবিরে ইতিমধ্যে ২৮ জন বন্দীর মৃত্যুর তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। আসামের তেজপুর, গোয়ালপাড়া, শিলচর, ডিব্রুগড়, কোকড়াঝাড় ও জোরহাট জেলায় বন্দিশিবিরগুলো রয়েছে। তবে ডিব্রুগড় বন্দিশালায় এখন পর্যন্ত কেউ মারা যায়নি। সর্বশেষ গোয়ালপাড়া বন্দিশিবিরের প্রবীণ বন্দী ফালু দাস মারা গেছেন।

নিত্যানন্দ রাই বলেন, যেহেতু তাঁরা অনুপ্রবেশ করেছেন, তাই তাঁদের ঠাঁই দেওয়া হয়েছে এই বন্দিশিবিরে। তৃণমূলের সাংসদ শান্তনু সেনের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, যেহেতু তাঁরা বেআইনিভাবে অনুপ্রবেশ করে গ্রেপ্তার হয়ে ডিটেনশন ক্যাম্পে মারা গেছেন, সেহেতু তাঁরা কোনো ক্ষতিপূরণ পাবেন না।

নিত্যানন্দ রাই বলেন, এনআরসি নিয়ে আতঙ্কে নয়, বরং বয়সের কারণে মারা গেছেন ২৮ জন। এসব বন্দীকে সরকার নানা সুবিধা দিয়ে থাকেন। চিকিৎসা সুবিধা থেকে খাবার, পোশাক, খবরের কাগজ, টেলিভিশন, খেলার জন্য জায়গা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করার জায়গাসহ গ্রন্থাগার, যোগব্যায়ামকেন্দ্র সবকিছুই রয়েছে এই বন্দিশিবিরে। রয়েছে বন্দীদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থাও। প্রয়োজনে তাঁদের সুচিকিৎসার জন্য তাঁদের নিয়মিত পাঠানোও হয় আসামের বিভিন্ন নামী সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। মন্ত্রী দাবি করেন, এসব বন্দিশিবিরে চিকিৎসার কোনো কমতি ছিল না।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে আসামের মানবাধিকার সংগঠন ‘আমরা বাঙালি’র সচিব এবং নাগরিক অধিকার রক্ষা কমিটির সচিব প্রধান সাধন পুরকায়স্থ প্রথম আলোকে বলেন, আসামের ৬টি বন্দিশিবিরে না খেয়ে ও কারারক্ষীদের জুলুমের শিকার হয়ে ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ জন্য দায়ী আসামের বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী সদানন্দ সনোয়াল। আসাম এখন হয়েছে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বধ্যভূমি।