ভারতীয় প্রকৌশলীর সহায়তায় চন্দ্রযান-২-এর ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পেল নাসা

চন্দ্রযান-২–এর ধ্বংসাবশেষের খোঁজ দিয়ে এই ছবি প্রকাশ করেছে নাসা। ছবি: নাসা থেকে সংগৃহীত
চন্দ্রযান-২–এর ধ্বংসাবশেষের খোঁজ দিয়ে এই ছবি প্রকাশ করেছে নাসা। ছবি: নাসা থেকে সংগৃহীত

চন্দ্রযান-২–কে ঘিরে অনেক স্বপ্ন দেখেছিল ভারত। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ইতিহাসের কাছাকাছি গিয়েও খালি হাতেই ফিরতে হয় ভারতকে। চাঁদের পৃষ্ঠ স্পর্শ করার আগেই নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে নভোযানটির দুটি অংশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। প্রায় তিন মাস পর এবার চন্দ্রপৃষ্ঠে চন্দ্রযান-২–এর ধ্বংসাবশেষের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (নাসা)।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাসার একটি স্যাটেলাইটে চন্দ্রযান-২–এর ধ্বংসাবশেষ ধরা পড়েছে। স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত একটি মোজাইক ছবিও প্রকাশ করেছে নাসা।

এই ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়ার পেছনে মূল কৃতিত্ব অবশ্য এক ভারতীয় প্রকৌশলীর। শানমুগা সুব্রামানিয়ান নামের সেই প্রকৌশলীই নাসার একটি ছবি গবেষণা করে প্রথম এই ধ্বংসাবশেষের অস্তিত্ব আবিষ্কার করেন। পরে তিনি বিষয়টি নাসাকে জানান। চন্দ্রযান-২ চন্দ্রপৃষ্ঠের যেখানে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়, সেখান থেকে ৭৫০ মিটার উত্তর-পূর্বে প্রথম ধ্বংসাবশেষের অস্তিত্ব ধরা পড়ে।

এক টুইটবার্তার মাধ্যমে ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে নাসা। টুইটে ওই মোজাইক ছবিটিও যুক্ত করেছে তারা। সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে নাসার একটি স্যাটেলাইট এই ছবিটি পাঠায়। নাসা ছবিটি প্রকাশ করার পর অনেকেই সেটি ডাউনলোড করে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে শুরু করেন। তাঁদের মধ্যে ভারতীয় প্রকৌশলী শানমুগার চোখে প্রথম এর অস্তিত্ব ধরা পড়ে। বিষয়টি তিনি নাসাকে জানালে তারা আরও গবেষণা শুরু করে। নিশ্চিত হওয়ার পর সংস্থাটি এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বার্তা প্রকাশ করে।

এমন পর্যবেক্ষণের জন্য শানমুগাকে ধন্যবাদ জানাতে ভোলেনি নাসা। ই-মেইলে পাঠানো সেই ধন্যবাদবার্তা টুইটারে সবার সঙ্গে ভাগাভাগিও করে নিয়েছেন সেই ভারতীয় প্রকৌশলী। চেন্নাইভিত্তিক এই প্রকৌশলী বিবিসি তামিলকে বলেছেন, ‘নাসার ওই ছবিটি আমাদের অনেকের কাছেই ছিল। চন্দ্রযান-২ ধ্বংস হওয়ার আনুমানিক জায়গাটা কোথায়, সেটি আমরা জানতাম। ওই জায়গাটার আশপাশের জায়গাগুলো আমি খুব সূক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করি।’

গত ৭ সেপ্টেম্বর ভারত সফলভাবে চন্দ্রযান-২ উৎক্ষেপণ করে। চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে ২ দশমিক ১ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবেই চলছিল ল্যান্ডার বিক্রমের অবতরণপ্রক্রিয়া। কিন্তু এরপরই হঠাৎ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সেটি। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়া চন্দ্রবিজয় করেছে। তবে সেগুলো সব কটি ছিল চাঁদের উত্তর প্রান্তে। চন্দ্রযান-২ চাঁদে অবতরণ করলে এটিই হতো চাঁদের দক্ষিণ প্রান্তের সবচেয়ে কাছাকাছি যাওয়া প্রথম নভোযান।