'নির্মলা কি অ্যাভোকাডো খান'

নির্মলা সীতারমণ। এএফপি ফাইল ছবি
নির্মলা সীতারমণ। এএফপি ফাইল ছবি

আগে শুনতে হয়েছিল ‘নির্বলা’। এবার শুনতে হলো ‘মারি আঁতোয়ানেত’। ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের বিড়ম্বনা অন্তহীন।

দেশের বেহাল অর্থনীতির সামাল দিতে ‘ব্যর্থ’ অর্থমন্ত্রীকে লোকসভার কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী দুর্বল বোঝাতে ‘নির্বলা’ আখ্যা দিয়েছিলেন দিন কয়েক আগে। সেই নিয়ে কম হইচই হয়নি। আজ বৃহস্পতিবার বিরোধীরা তাঁকে কটাক্ষ করে বলেন, উনি মারি আঁতোয়ানেত।

রাজা ষোড়শ লুইয়ের আমলে খাদ্যসংকটের সময় ফ্রান্সে যখন পাউরুটির আকাল, তখন মারি আঁতোয়ানেত প্রজাদের পাউরুটি না পেলে কেক খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। এই তুলনা আজ চলে আসে যখন সংসদে পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনার সময় নির্মলা সীতারমণ বলেন, ‘আমি পেঁয়াজ-রসুন প্রায় খাই না বলা যায়। আমাদের পরিবারে এর বিশেষ চল নেই।’ এ কথা শুনে কংগ্রেস নেতা সাবেক অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম জানতে চান, ‘তা হলে কি উনি অ্যাভোকাডো খান?’ বিরোধী শিবির থেকে তখন নির্মলার উদ্দেশে মারি আঁতোয়ানেত ধ্বনি উঠছে।

চিদাম্বরম গতকাল বুধবার রাতেই জামিন পান। ১০৬ দিন তিহার জেলে বন্দী থাকার পরদিনই তিনি সংসদের অধিবেশনে যোগ দেন। তার আগে কংগ্রেস সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি দেশের বেহাল অর্থনীতির জন্য সরকারকে একহাত নেন। বলেন, প্রধানমন্ত্রী মুখে রা কাড়ছেন না। অর্থনীতি নিয়ে কিছুই বলছেন না। সব দায় ছেড়ে দিয়েছেন মন্ত্রীদের ওপর—যাঁরা কিছুই জানেন না, বোঝেনও না। সেই মন্ত্রীরা লোকজনকে ভুল বোঝাচ্ছেন। মিথ্যা বলছেন। বুজরুকি দিচ্ছেন। অর্থনীতি চালাচ্ছেন অদক্ষ কয়েকজন ম্যানেজার। প্রধানমন্ত্রী তো বটেই, কেউই কোনো কূলকিনারা পাচ্ছেন না।

চিদাম্বরম বলেন, ‘আমাদের সময় বার্ষিক প্রবৃদ্ধির শেষ হার ছিল ৮ শতাংশ। বিজেপি আমলে সেটা কমেই চলেছে। ৮ থেকে কমে হলো ৭। তারপর ৬ দশমিক ৬ শতাংশ। তার পর ৫ দশমিক ৮, ৫ এবং এখন সাড়ে ৪ শতাংশ।’ এ কথার সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রীর সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রামানিয়মের মন্তব্য মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, এই সরকার যে প্রক্রিয়ায় প্রবৃদ্ধির হার ঠিক করছে, তাতে ৫ শতাংশ বৃদ্ধি আসলে দেড় শতাংশ। তিনি বলেন, অর্থনীতির অধোগমন হতেই পারে। কিন্তু তা রোখার মতো দক্ষতা এই সরকারে কারও নেই।

শীতকাল হলেও খাদ্যশস্যের দাম বেড়েই চলেছে। পেঁয়াজ নিয়ে সারা দেশে হাহাকার। মিসর থেকে আমদানি করেও পরিস্থিতির সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। নতুন ফসল বাজারে উঠে গেলেও পেঁয়াজের কেজি কোথাও ১০০, কোথাও ১৫০ রুপি।

অর্থনৈতিক দুর্নীতির অভিযোগে তিহারে ১০৬ দিন কাটিয়ে এসে চিদাম্বরম বলেন, এই সময়ে তাঁর ওজন কমেছে আট কেজি। কাঠের তক্তায় শুয়ে শুয়ে তাঁর শরীর ও মন আরও শক্ত হয়েছে। শিরদাঁড়া হয়েছে আরও টান টান। মনও চনমনে।