৬ ঘণ্টা পর বেঁচে উঠলেন নারী

অড্রে শোম্যান।  ছবি: রয়টার্স
অড্রে শোম্যান। ছবি: রয়টার্স

হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ ছিল ছয় ঘণ্টা। এরপরও বেঁচে গেছেন এক ব্রিটিশ নারী। ঘটনাটি ঘটেছে স্পেনে। ওই নারীর নাম অড্রে শোম্যান। স্বাভাবিকভাবেই চিকিৎসকেরা এই ঘটনাকে ‘ব্যতিক্রম’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

৩৪ বছর বয়সী ওই নারী স্পেনের বার্সেলোনায় থাকেন। গত নভেম্বরে স্পেনের কাতালোনিয়া পিরিনীয় পর্বতমালায় আরোহণে গিয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্বামী রোহান শোম্যান। সেখানে গিয়ে তুষার ঝড়ে পড়েন তাঁরা। ফলে হাইপোথারমিয়ায় আক্রান্ত হন তিনি। একটা সময় গিয়ে অচেতন হয়ে পড়েন অড্রে।

ঝড় হচ্ছে, কিন্তু তখন অড্রের জরুরি স্বাস্থ্যসেবা প্রয়োজন। আশপাশে তেমন কোনো সুবিধাও ছিল না। ফলে রোহান শোম্যান আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। তিনি ধরে নিয়েছিলেন, অড্রে মারা গেছেন। গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে রোহান বলেন, ‘আমি অড্রের হৃৎস্পন্দন অনুভব করার চেষ্টা করি। তিনি যে নিশ্বাস নিচ্ছেন সেটাও বুঝতে পারছিলাম না। এমনকি তাঁর হৃৎস্পন্দনও বোঝা যাচ্ছিল না।’

আক্ষরিক অর্থে রোহানের আশাবাদী হওয়ার কোনো কারণ ছিল না। বলা হয়ে থাকে, শীতজনিত বিভিন্ন অসুখের মধ্যে হাইপোথারমিয়া বিপজ্জনক। কারণ, মানুষের শরীরের ভেতরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট। কিন্তু দীর্ঘ সময় পর্যাপ্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থা ছাড়া তীব্র শীতের মধ্যে থাকলে এতে মানুষ আক্রান্ত হয়। শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা কমে যায়। আর এটাই হয়েছিল অড্রের ক্ষেত্রে।

এ অবস্থায় দুই ঘণ্টা কেটে যায়। এরপর সেখানে পৌঁছায় জরুরি সেবাদানকারী দল। কিন্তু ততক্ষণে আশা আর নেই। কারণ, অড্রের শরীরের তাপমাত্রা তখন ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে গেছে। এই নিরাশার মধ্যে অড্রেকে বার্সেলোনার ভাল ডি হেব্রন হাসপাতালে নেওয়া হয়। অড্রের ক্ষেত্রে অবশ্য নিরাশাই আশার কারণ হয়েছিল। হাসপাতালের চিকিৎসক এদুয়ার্দ আরগুদো বলেন, ‘একজন মৃত মানুষের মতোই লাগছিল তাঁকে।’