'তাদেরও গুলি করে মেরে ফেলা উচিত'

‘তাদেরও গুলি করে মেরে ফেলা উচিত’। ভারতের উত্তর প্রদেশের উন্নাওয়ে ধর্ষণ ও নির্যাতনে মারা যাওয়া নারীর বাবা অপরাধীদের এই পরিণতি চেয়েছেন। তেলেঙ্গানার ধর্ষণ–হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন চারজন পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার কথা উল্লেখ করে উন্নাওয়ে ধর্ষণ–হত্যার শিকার মেয়েটির বাবা আজ শনিবার অপরাধীদের একই শাস্তি চেয়েছেন।

সাংবাদিকদের কাছে নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ওই তরুণীর বাবা বলেন, ‘সরকার ও কর্তৃপক্ষের কাছে শুধু এটাই চাওয়া যে খুনিদের হয় ফাঁসি হোক, কিংবা তাদের গুলি করে মেরে ফেলা হোক। হায়দরাবাদে যা ঘটেছে, এ ক্ষেত্রেও তা–ই করা হোক। আমার কোনো লোভ নেই। আমাকে কোনো ঘর তৈরি করে দেওয়া হোক, তা চাই না। আমি অন্য কিছু চাই না। আমার মেয়ে রায়বেরিলিতে একা ট্রেন ধরতে যাচ্ছিল।’

ভারতের তেলেঙ্গানার রাজধানী হায়দরাবাদে তরুণী প্রাণিচিকিৎসককে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় শুক্রবার সন্দেহভাজন চার ব্যক্তি পুলিশের গুলিতে নিহত হন। গত বুধবার রাতে হায়দরাবাদে ২৭ বছরের ওই তরুণীকে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনার বীভৎসতায় ফুঁসে উঠেছে গোটা ভারত। চলছে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই উত্তর প্রদেশ রাজ্যের উন্নাওতে ধর্ষণের শিকার তরুণীকে পাঁচজন পুরুষ পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে দেন। উন্নাওয়ের ওই নারীকে পেটানো ও ছুরিকাঘাত করা হয়। হামলাকারী পাঁচজনের মধ্যে ওই নারীকে ধর্ষণ মামলার দুই আসামিও ছিলেন। শুক্রবার শেষ রাতের দিকে দিল্লির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই নারী মারা গেছেন।

হাসপাতালে যাওয়ার পথে পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে ওই নারী পাঁচ হামলাকারীর নাম পুলিশকে বলেন। ওই নারী পুলিশকে জানান, ধর্ষণ মামলার শুনানির জন্য তিনি আদালতে যাচ্ছিলেন। এ সময় উন্নাওতে তাঁর গ্রামের কাছের রেলস্টেশনে পাঁচজন তাঁকে ঘিরে ধরেন। হামলাকারীদের মধ্যে ধর্ষণ মামলার দুই আসামিও ছিলেন।

হাসপাতালে পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে ওই নারী বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার ভোর চারটার দিকে আমি রায়বেরিলির ট্রেন ধরার জন্য স্টেশনে যাচ্ছিলাম। তাঁরা আমার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তাঁরা আমাকে ঘিরে ধরেছিলেন। প্রথমে লাঠি দিয়ে আমার পায়ে আঘাত করেন। পরে আমার গলায় ছুরিকাঘাত করেন। এরপর তাঁরা আমার শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন।’

আগুনে তাঁর শরীরের ৯০ ভাগ পুড়ে গিয়েছিল। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার পর উত্তর প্রদেশ থেকে উড়োজাহাজে করে তাঁকে সফদরজং হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।

ওই তরুণীর ভাই বলেন, তাঁর বোন তাঁকে বলে গেছেন যে তিনি ওই পুরুষদের শাস্তি চান।

উন্নাওয়ের ওই তরুণীর মৃত্যুর ঘটনাটিকে অত্যন্ত দুঃখজনক বলেছেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তিনি বলেন, উন্নাওয়ে ধর্ষণের অভিযোগ করা ওই তরুণীকে গায়ে আগুন লাগিয়ে হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের শুনানি ও বিচার দ্রুত বিচার আদালতে হবে।