শেষ মুহূর্তে ভোটারদের সতর্ক করছেন নেতারা

বরিস জনসন ও জেরেমি করবিন
বরিস জনসন ও জেরেমি করবিন

আর এক দিন পর বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যে সাধারণ নির্বাচন। এ নির্বাচন কেবল দেশের শাসনক্ষমতা কার হাতে যাবে, সেটি নির্ধারণ করবে না, সেই সঙ্গে ব্রেক্সিটের (ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ) ভবিষ্যৎ কী হবে, তাও নির্ভর করছে এই ভোটের ফলাফলের ওপর। প্রচার-প্রচারণার শেষ সময়ে এসে নেতারা তাই ভোটারদের সতর্ক করছেন। তাঁরা নিজেদের প্রতিশ্রুতি বারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

শেষ পর্বের প্রচারণায় কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ও প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ব্রেক্সিট কার্যকরের বিষয়টিকে জোরালোভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে, প্রধান বিরোধী দল লেবারের নেতা জেরেমি করবিন এক দশক ধরে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ সরকারের কৃচ্ছ্রসাধন নীতির কুফলগুলোর দিকে ভোটারদের দৃষ্টি ফেরাতে জোর দিচ্ছেন।

কৌতুকপূর্ণ আচরণে অভ্যস্ত প্রধানমন্ত্রী জনসন গতকাল সোমবার নির্বাচনের মাঠে এক অদ্ভুত কাণ্ড করে বসেন। লিডসের একটি হাসপাতালের মেঝেতে শোয়া নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত এক শিশুর ছবি দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুভূতি জানতে চাইছিলেন এক সাংবাদিক। আইটিভির সাংবাদিক নিজের মোবাইলে সংরক্ষিত ওই ছবির প্রতি বারবার জনসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছিলেন। কিন্তু জনসন ছবির দিকে না তাকিয়ে স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে নিজের প্রতিশ্রুতিগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে সাংবাদিকের মোবাইলটি কেড়ে নিয়ে নিজের পকেটে ভরে ফেলেন প্রধানমন্ত্রী জনসন। সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি ছবিটির দিকে তাকালেনই না, আমার মোবাইলটিও নিয়ে নিলেন?’ বাধ্য হয়ে জনসন পকেট থেকে মোবাইলটি বের করে ছবিটি দেখেন এবং তা ফেরত দেন। জনসনের এমন আচরণ তুমুল সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

লেবার নেতা করবিন এক টুইট বার্তায় বলেন, জনসনের আচরণ থেকে স্পষ্ট তাঁরা জনগণের স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টিকে পাত্তাই দেয় না। ওই শিশুকে মেঝেতে রাখার বিষয়টি কনজারভেটিভ সরকারের বাজেট কর্তনের কুফল।

অবশ্য পরবর্তী সময়ে জনসন ওই শিশুর পরিবারের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত স্বাস্থ্যবিষয়ক মন্ত্রী ম্যাট হ্যানকককে পাঠিয়েছেন ওই শিশু ও তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে। তবে লিডস হাসপাতালে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন হ্যানকক।

কনজারভেটিভরা জাতীয় স্বাস্থ্যসেবাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে এবং ব্রেক্সিট কার্যকর হলে তারা স্বাস্থ্যসেবাকে মার্কিন কোম্পানিগুলোর হাতে তুলে দেবে—এমন অভিযোগ তুলে প্রচারণার শুরু থেকেই কনজারভেটিভদের ঘায়েল করার চেষ্টা করছে লেবার পার্টি। তাই গতকাল সোমবার জনসনের ওই কাণ্ড প্রচারণার মাঠে লেবারের জন্য বড় সুযোগ এনে দেয়। জাতীয় স্বাস্থ্যসেবার সুরক্ষায় নিরলস কাজ করার প্রতিজ্ঞা পুনর্ব্যক্ত করেছেন করবিন।

অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আজ ভোটারদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ব্রেক্সিট নিয়ে পার্লামেন্টে সৃষ্ট অচলাবস্থা নিরসনের জন্যই এই নির্বাচন। এই অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে হলে কনজারভেটিভ পার্টিকে এককভাবে ক্ষমতায় ফেরানোর কোনো বিকল্প নেই।