নারীঘটিত মামলার আসামি বিজেপি জনপ্রতিনিধিরাই বেশি

ভারতে নারীঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি মামলা রয়েছে বিজেপির সাংসদ ও বিধায়কদের বিরুদ্ধে। রাজ্যের দিক দিয়ে এ-সংক্রান্ত মামলায় শীর্ষে পশ্চিমবঙ্গ।

ভারতের বর্তমান সাংসদ ও বিধায়কদের ৪ হাজার ৮৯৬টি নির্বাচনী হলফনামার মধ্যে ৪ হাজার ৮২২টি খতিয়ে দেখে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর) ও ন্যাশনাল ইলেকশন ওয়াচ এই তথ্য প্রকাশ করেছে।

নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সময় প্রার্থীদের নির্বাচন কমিশনে যে হলফনামা জমা দিতে হয়, সেখানে তাঁদের নিজেদের বিরুদ্ধে থাকা মামলার তালিকা উল্লেখ করতে হয়।

গত পাঁচ বছরের ৭৭৬ জন সাংসদের মধ্যে ৭৫৯ জনের এবং ৪ হাজার ১২০ জন বিধায়কের মধ্যে ৪ হাজার ৬৩ জনের হলফনামা বিশ্লেষণ করে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, নারীঘটিত অপরাধে সবচেয়ে বেশি মামলা রয়েছে দেশের শাসক দল বিজেপির সাংসদ ও বিধায়কদের বিরুদ্ধে।

সমীক্ষায় জানা যায়, দেশের ১৮ জন সাংসদ ও ৫৮ জন বিধায়ক নির্বাচন কমিশনকে হলফনামায় জানিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে নারীঘটিত অপরাধের অভিযোগ আছে। এর মধ্যে বিজেপি সাংসদ-বিধায়কের সংখ্যা ২১। কংগ্রেসের সাংসদ-বিধায়কের সংখ্যা ১৬। ওয়াইএসআর কংগ্রেসের সাংসদ-বিধায়কের সংখ্যা ৭।

গত পাঁচ বছরে লোকসভা, রাজ্যসভা ও বিধানসভা ভোটে ৫৭২ জন এমন প্রার্থী ছিলেন, যাঁরা কোনো না কোনো স্তরের নারী নিগ্রহ মামলার অভিযুক্ত। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো, তাঁদের একজনেরও শাস্তি হয়নি।

সমীক্ষা থেকে জানা যায়, দেশে নারীর বিরুদ্ধে অপরাধে অভিযুক্ত সাংসদ-বিধায়কের সংখ্যা পশ্চিমবঙ্গেই সবচেয়ে বেশি। এই সংখ্যা ১৬। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ওডিশা ও মহারাষ্ট্র। সেখানে এমন সাংসদ-বিধায়কের সংখ্যা ১২।

পশ্চিমবঙ্গের মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের ভাষ্য, ‘নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, এমন কেউ তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক বা সাংসদ বলে আমার জানা নেই।’

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণা দেবনাথের সাফ উত্তর, কংগ্রেসে এমন অভিযুক্ত কেউ নেই। থাকলে দল নিশ্চয়ই আগামী দিনে তাঁকে ভোটে লড়তে দেবে না।

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, অনেক সময় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়। তবে কেউ নারীঘটিত অপরাধে জড়িত জেনেও তাঁকে ভোটে প্রার্থী করলে দলেরই ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়।