ভারত সফর বাতিল করতে পারেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী

জাপানের প্রধানমন্ত্রী সিনজো আবে। ছবি: রয়টার্স
জাপানের প্রধানমন্ত্রী সিনজো আবে। ছবি: রয়টার্স

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে চলমান বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সফর বাতিল করতে পারেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। আজ শুক্রবার এনডিটিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

আবের ভারত সফর আগামী রোববার শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু জাপানের জিজি প্রেস বলছে, তিনি এই সফর বাতিল করার কথা ভাবছেন।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের দিল্লি সফর ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের মেঘালয় সফর গতকাল শেষ মুহূর্তে বাতিল হয়েছে। তিন দিনের সফরে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল। আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের আজ সড়কপথে মেঘালয় যাওয়ার কথা ছিল। আগে থেকেই ঠিকঠাক সফরটি হঠাৎ করে কেন বাতিল হলো, তা নিয়ে গতকাল রাত পর্যন্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছু জানায়নি। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের মেঘালয় সফর বাতিল করা হয়েছে সেখানকার উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে।

জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচি অনুযায়ী আসাম রাজ্যের রাজধানী গুয়াহাটিতে তাঁর ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক করার কথা।

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে এখন বিক্ষোভে উত্তাল আসাম। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আশ্বাস ও অন্যান্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর অনুরোধ সত্ত্বেও আসামের আগুন জ্বলছে। বিক্ষোভ সামাল দিতে নামানো হয়েছে সেনাবাহিনী। জারি করা হয়েছে কারফিউ। সবকিছু অগ্রাহ্য করে রাজ্যটির শহরে শহরে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমেছেন। আগুন জ্বেলে সড়ক ও রেলপথে অবরোধ সৃষ্টি করা হয়েছে। ক্ষমতাসীন বিজেপির এক এমপির বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে চারটি রেলস্টেশন ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের একটা কার্যালয়। রাজ্যের রাজধানী গুয়াহাটিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন দুজন। আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন।

এ নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবীশ কুমার বলেন, ‘বলার মতো কোনো হালনাগাদ তথ্য আমাদের কাছে নেই।’

গত সপ্তাহে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, ১৫ থেকে ১৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও সিনজো আবের মধ্যে বৈঠক হবে।

বিতর্কিত বিলটি গত সোমবার পাস হয় লোকসভায়। আর গত বুধবার পাস হয় রাজ্যসভায়। বৃহস্পতিবার রাতে বিলটিতে স্বাক্ষর করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। ফলে বিলটি আইনে পরিণত হয়েছে। ইতিমধ্যে গেজেটও প্রকাশ করা হয়েছে।

১৯৫৫ সালের ভারতীয় নাগরিকত্ব আইনে এই সংশোধনের ফলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত হয়ে চলে আসা হিন্দু, শিখ, খ্রিষ্টান, জৈন, পারসি ও বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা ভারতের নাগরিকত্ব পাবেন।