ঐক্যের আহ্বান জানালেন জনসন

১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটে বরিস জনসন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন।  ১৩ ডিসেম্বর। ছবি: এএফপি
১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটে বরিস জনসন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। ১৩ ডিসেম্বর। ছবি: এএফপি

ঐতিহাসিক বিজয়ে ক্ষমতায় ফিরে দেশবাসীকে ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। গতকাল শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেলে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান।

জনসন বলেন, তাঁর সরকারের অন্যতম প্রধান কাজ এখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ (ব্রেক্সিট) কার্যকর করা। তবে যাঁরা ব্রেক্সিটের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন এবং প্রতিবেশী ইউরোপিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখতে চান তাঁদের অনুভূতিও তিনি বুঝতে পারেন। ইইউর সঙ্গে সম্পর্ক নবায়নের ক্ষেত্রে বিষয়টিকে তিনি গুরুত্ব দেবেন বলে জানান।

ব্রেক্সিটের পক্ষে-বিপক্ষের সবাইকে বিভক্তি ভুলে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার কাজে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

যাঁরা লেবার পার্টির ভোটার এবং প্রথমবারের মতো কনজারভেটিভ পার্টিকে সমর্থন দিয়ে বিশাল জয় এনে দিয়েছেন, তাঁদের প্রতি বিশেষ ধন্যবাদ জানান জনসন। তিনি বলেন, তাঁর সরকার সাবেক এই লেবার ভোটারদের আশাহত করবে না।

এমন বক্তব্যের পর আজ শনিবার সকালেই জনসন ছুটে গেছেন উত্তর ইংল্যান্ডে, যেখানে লেবারের দুর্গ বলে পরিচিত অনেকগুলো আসনে এবার কনজারভেটিভ প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে বরিস জনসনের কনজারভেটিভ পার্টি ১৯৮৭ সালের পর সবচেয়ে সেরা ফলাফল অর্জন করে। দলটির প্রাপ্ত আসন ৩৬৫, যা সংসদে দলটিকে ৮০ আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা এনে দিয়েছে। অন্যদিকে, ১৯৩৫ সালের পর লেবার সবচেয়ে খারাপ ফলাফল করেছে। দলটির প্রাপ্ত আসন মাত্র ২০৩। এটি লেবারের টানা চতুর্থ পরাজয়।

লেবার নেতা জেরেমি করবিন বলেছেন, দলকে ক্ষমতায় ফেরাতে তিনি নিজের সাধ্যমতো সবকিছু করেছেন। নতুন বছরের শুরুর দিকে দলীয় প্রধানের পদ ছাড়বেন জানিয়ে করবিন বলেন, নতুন নেতা নির্বাচনের সুযোগ না দিয়ে হুট করে কেটে পড়া সুবুদ্ধির কাজ নয়।

এ নির্বাচনের ফলাফলকে ব্রেক্সিট কার্যকরের পক্ষে জনগণের জোরালো রায় বলে দেখা হচ্ছে। তিন বছর ধরে যাঁরা পার্লামেন্টে ব্রেক্সিটের বিরোধিতা করেছেন, তাঁদের বেশির ভাগই এ নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে আলোচিত অ্যানা সোবরি, ডোমিনিক গ্রিভ, চুকা উমুন্না, লুসিয়ানা বার্জার, স্যাম গিমা ও স্যারা উইলসটন। তাঁরা দলের ব্রেক্সিট নীতির বিরোধিতা করে ভিন্ন ব্যানারে নির্বাচন করেছিলেন।

এদিকে স্কটল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী এসএনপি নেতা নিকোলা স্টারজিয়নের সঙ্গে গতকাল টেলিফোনে কথা বলেছেন বরিস জনসন। স্কটল্যান্ডের ৫৯ আসনের মধ্যে ৪৮টি আসন এসএনপি জিতে নেওয়ার পর নিকোলা বলেছিলেন, ইংল্যান্ডের মানুষ ব্রেক্সিট কার্যকরে জনসনকে সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু স্কটল্যান্ডে তিনি পরাজিত নেতা। স্কটল্যান্ডকে ইইউ থেকে বের করে আনার ক্ষমতা স্কটিশরা তাঁকে দেননি। স্বাধীনতাকামী এনএনপি নেতা বলেন, স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা প্রশ্নে গণভোট আয়োজনে জনসনের বাধা দেওয়া ঠিক হবে না। স্টারজিয়নের এমন বক্তব্যের পর জনসন তাঁর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন।

আগামী সোমবার জনসন তাঁর মন্ত্রিসভায় কিছু রদবদল করবেন। মঙ্গলবার থেকে পার্লামেন্টে ফিরবেন এমপিরা। শুক্রবারের মধ্যে ব্রেক্সিট চুক্তি পাশের জন্য পার্লামেন্টে উত্থাপন করা হবে। আগামী ৩১ জানুয়ারি ব্রেক্সিট কার্যকর করতে চান জনসন।