ভারতের উত্তর প্রদেশে সহিংসতায় নিহত ৬

ভারতের নয়াদিল্লিতে পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিক্ষোভ চলাকালে বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ জলকামান ব্যবহার করেছে। নয়াদিল্লি, ভারত, ২০ ডিসেম্বর। ছবি: এএফপি
ভারতের নয়াদিল্লিতে পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিক্ষোভ চলাকালে বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ জলকামান ব্যবহার করেছে। নয়াদিল্লি, ভারত, ২০ ডিসেম্বর। ছবি: এএফপি

নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিক্ষোভ চলাকালে ভারতের উত্তর প্রদেশে সহিংসতায় নিহত হয়েছেন ৬ জন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ কথা জানিয়েছে। তবে উত্তর প্রদেশের পুলিশ কর্তৃপক্ষের দাবি, শুক্রবারের সহিংসতায় পুলিশ একটি গুলিও ছোড়েনি।

উত্তর প্রদেশের পুলিশ বিভাগের মহাপরিচালক ওপি সিং বলেছেন, পুলিশের গুলিতে কোনো ব্যক্তির মৃত্যু হয়নি। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি বুলেটও ছুড়িনি।’

পুলিশ জানিয়েছে, বিনজোরে দুই বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। সম্ভল, ফিরোজাবাদ, মিরাট ও কানপুরে ১ জন করে বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। এনডিটিভির কাছে পুলিশের দাবি, বিক্ষোভকারীদের তরফ থেকেই গুলি চালানো হয়েছিল। পুলিশ কিছুই করেনি।

ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়েছে, কানপুরে সহিংসতায় মোট ১৩ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে পুলিশের ৬ সদস্যও আছেন। পুলিশ সেখানে মোট ২৫ জন বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে।

এদিকে হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, ইন্ডিয়া গেট, জামা মসজিদ, দিল্লি গেট ও জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিকভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শন অব্যাহত আছে। দিল্লিতে পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ জলকামান ব্যবহার করেছে। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, পুরোনো দিল্লির জামা মসজিদের সামনে এক বিক্ষোভের সময় দলিত নেতা চন্দ্রশেখর আজাদকে পুলিশ আটক করেছিল। পরে পুলিশ হেফাজত থেকে পালিয়ে যান চন্দ্রশেখর। দিল্লিতে পুলিশ জামা মসজিদের সামনের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। কিছু মেট্রো স্টেশনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

রাজধানী নয়াদিল্লিতে বিক্ষোভের সময় আজ শুক্রবার ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির মেয়ে শর্মিষ্ঠা মুখার্জিসহ ৫০ জনকে আটক করা হয়েছে। নয়াদিল্লির অন্যতম প্রাচীন একটি মসজিদের সামনে বিক্ষোভ করছেন হাজারো মানুষ। উত্তর প্রদেশের ১৩ জেলায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। সব মিলিয়ে পুরো দেশেই উত্তাপ ছড়াচ্ছে বিক্ষোভের আগুন। বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন শহরে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ভারতের নতুন নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে যেসব অমুসলিম মানুষ ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁরা এবার ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই আইন বাতিলের দাবিতে রাজধানী দিল্লিসহ ভারতের বিভিন্ন এলাকায় কয়েক দিন ধরে চলছে বিক্ষোভ।

অবশ্য নাগরিকত্ব আইনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী জন বিক্ষোভের মুখে পিছু হটবার কোনো ইঙ্গিত কেন্দ্রীয় সরকার এখনো দেয়নি। তবে দেশব্যাপী এনআরসি করার বিষয়ে সরকার ধীরে চলার নীতি নিয়েছে। সরকার যে বিজ্ঞাপন দিতে শুরু করেছে তাতে বলা হচ্ছে, দেশে এনআরসির ঘোষণা এখনো হয়নি। যখন হবে তখন তা এমনভাবে করা হবে যাতে কোনো ভারতীয় নাগরিক অসুবিধার মধ্যে না পড়েন।