ইরান আর যুদ্ধ চায় না

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ। ছবি: রয়টার্স
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ। ছবি: রয়টার্স

যুদ্ধ বা উত্তেজনা আর বাড়াতে চাইছে না ইরান। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ আজ বুধবার এক টুইটে এই ঘোষণা দেন। ইরাকের দুটি মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কয়েক ঘণ্টা পর তিনি এই টুইট করেন।

জাভেদ জারিফ লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে পাল্টা জবাব দেওয়া হয়ে গেছে। ইরান আর উত্তেজনা বা যুদ্ধ চায় না।

জাভেদ জারিফ লিখেছেন, ‘আমাদের জনগণ ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের ওপর যে ঘাঁটি থেকে কাপুরুষোচিত সশস্ত্র হামলা করা হয়েছে, জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদ অনুসারে আত্মরক্ষায় ইরান সেখানে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে এর (ঘটনার) সমাপ্তি টেনেছে।’ 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক টুইটে বলেছেন, স্থানীয় সময় বুধবার সকালে তিনি এ নিয়ে বিবৃতি দেবেন। 

হামলার ঘটনার পর প্রথম প্রতিক্রিয়ায় টুইটে ট্রাম্প বলেন, ‘সব ঠিক আছে! ইরাকে অবস্থিত দুটি সামরিক ঘাঁটিতে ইরান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণের কাজ চলছে এখন। এখন পর্যন্ত যা হয়েছে, ভালো হয়েছে! এখন পর্যন্ত বিশ্বের যেকোনো জায়গার চেয়ে আমাদের সবচেয়ে শক্তিশালী ও সুসজ্জিত সামরিক বাহিনী রয়েছে! কাল সকালে আমি বিবৃতি দেব।’

ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের হামলায় খুব বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, ইরাকের যে দুটি মার্কিন বিমান ঘাঁটিতে ইরান হামলা চালিয়েছে, সে দুটি হলো আল-আসাদ ও ইরবিল। সেখানে মার্কিন সেনারা অবস্থান করছিল। প্রাথমিকভাবে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হওয়ার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ইরাকের ওই দুটি মার্কিন বিমান ঘাঁটিতে এক ডজনেরও বেশি ‘ব্যালিস্টিক মিসাইল’ ছুড়েছে ইরান।

গত শুক্রবার ভোরে ইরাকের বাগদাদে মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানি জেনারেল কাশেম সোলাইমানি নিহত হয়েছেন। সোলাইমানি হত্যার ঘটনায় ইরান চরম প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দেয়। এর প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাল্টা হুমকি দিয়ে বলেন, ইরান হামলা চালালে দেশটির ৫২টি স্থাপনায় দ্রুত ও শক্তিশালী হামলা চালানোর জন্য মার্কিন সেনারা প্রস্তুত।

ইরানি কর্মকর্তারা বলছেন, রেভল্যুশনারি গার্ডের কমান্ডারকে হত্যার প্রতিশোধের যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, এটা তার শুরু। টেলিগ্রাম চ্যানেলে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ভয়ংকর প্রতিশোধ শুরু হয়ে গেছে।

নিজ শহরে জেনারেল কাশেম সোলাইমানিকে কবর দেওয়ার জন্য আনার কয়েক ঘণ্টা পরই ইরানের সংবাদমাধ্যমগুলোতে ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার খবর প্রচার করে।

ইরানের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, হামলার জবাব দিলে আরও বড় ধরনের আক্রমণ করা হবে। এটি কোনো হুমকি নয় এটা হুঁশিয়ারি।

হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রেসিডেন্টকে ঘটনা জানানো হয়েছে। তিনি বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং জাতীয় নিরাপত্তা দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

এর আগে মার্কিন গোয়েন্দারা ইরানের সম্ভাব্য আক্রমণের বিষয়ে সতর্ক করে দেয়। ইরাক ও মধ্যপ্রাচ্যের মার্কিন ঘাঁটিতে এ ধরনের আক্রমণের বিষয়ে আগেই সতর্ক ছিল যুক্তরাষ্ট্র।