বিজেপির চক্ষুশূল দীপিকা

দীপিকা পাড়ুকোন
দীপিকা পাড়ুকোন

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বুকে জড়িয়ে যিনি কিছুদিন আগে ক্ষমতাসীন বিজেপির নয়নের মণি হয়ে উঠেছিলেন, হিন্দি ছবির সেই জনপ্রিয় অভিনেতা রণবীর সিংয়ের স্ত্রী অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন আজ তাদেরই চক্ষুশূল। এটা এতটাই যে বিজেপির সমর্থকেরা দীপিকার সিনেমা বর্জন করার দাবিতে সরব হয়েছেন।

দীপিকার ‘অপরাধ’, বিজেপির সমর্থনপুষ্ট ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি) সশস্ত্র আক্রমণের শিকার দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে আক্রান্ত বামপন্থী ছাত্রসংগঠনের সভানেত্রী ঐশী ঘোষের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন দীপিকা। এতে বলিউড অভিনেত্রী ‘দেশদ্রোহীদের’ মদদ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিজেপি-সমর্থকেরা।

উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা দীপিকার সিনেমা বয়কটের ডাক দিয়েছেন। দিল্লি বিজেপির মুখপাত্র তেজিন্দর পাল সিং বলেছেন, দীপিকার অপরাধ তিনি ‘দেশদ্রোহী’ ও ‘টুকরে টুকরে গ্যাংয়ের’ পাশে সমর্থনের ডালি নিয়ে দাঁড়িয়েছেন। এই ‘অপরাধে’ তাঁর সব সিনেমা বর্জন করা হোক। এই আহ্বানে টুইটারে গলা মিলিয়েছেন অনেকেই। আবার বিপক্ষেও শুরু হয়েছে সমর্থনের বন্যা। অ্যাসিড-আক্রান্তদের নিয়ে গুলজার-রাখীর মেয়ে মেঘনার সাম্প্রতিক সিনেমা ছপাক এই সপ্তাহে মুক্তি পাবে। দীপিকার পক্ষে যাঁরা, তাঁরা বলছেন, এই সিনেমা হিট হবেই। আর সেটাই হবে ‘ফ্যাসিবাদের’ বিরুদ্ধে ‘গণতন্ত্রী’ ও ‘অসাম্প্রদায়িক’ মানুষের মোক্ষম জবাব।

বিজেপির হুংকারে দীপিকা অবশ্য মোটেই ভীত নন। তিনি বলেছেন, ‘আমার এটা দেখে গর্ব হচ্ছে, মানুষ নিজেদের মতামত জানাতে এগিয়ে আসছে। তারা আর ভয় পাচ্ছে না। যার মত যা-ই হোক না কেন, সবাই যে দেশ নিয়ে ভাবছেন, সেটাই বড় কথা। পরিবর্তনের জন্য মতামত স্পষ্ট করে বলা দরকার।’

জেএনইউর ঐশী ঘোষের কাছে গিয়ে সমর্থনের বার্তা দিয়ে দীপিকা বলেছেন, ‘অত্যাচারিতদের পাশে আছি।’ ফেসবুকে সেই ছবি পোস্ট করে ঐশী লেখেন, ‘প্রতিটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলুন।’

দীপিকার ওপর আক্রমণ অবশ্য এই প্রথম নয়। পদ্মাবত সিনেমার সময় তিনি রাজপুতদের একাংশের রোষে পড়েছিলেন। বলা হয়েছিল, রানি পদ্মাবতীর চরিত্র তিনি হনন করেছেন। রাজপুতদের একটা সংগঠন ‘করণী সেনা’ হুমকি দিয়েছিল, সিনেমাটা মুক্তি পেতে দেবে না। দীপিকার নাক কেটে দেবে।