ভারতে গতকাল থেকে কার্যকর হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন

অমিত শাহ। ফাইল ছবি
অমিত শাহ। ফাইল ছবি

চলমান আন্দোলনকে উপেক্ষা করে ভারতে গতকাল শুক্রবার থেকে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) কার্যকর হয়েছে। তবে এই আইন বাতিলের দাবিতে এখনো দেশজুড়ে চলছে তীব্র প্রতিবাদ, বিক্ষোভ সমাবেশ ও আন্দোলন। এ নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে, রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে অনেক স্থান।

কিন্তু কোনো কিছুই আটকাতে পারেনি ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। সবকিছু উপেক্ষা করে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল থেকে এক নির্দেশিকায় দেশে কার্যকর করেছে এই আইন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে এ কথা জানানো হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (২০১৯) ধারা ১ এর উপধারা ২ মেনে ১০ জানুয়ারি ২০২০ থেকে এই আইন কার্যকর করা হলো। গত ১১ ডিসেম্বর ভারতের সংসদে পাস হয় এই নাগরিকত্ব আইন। নতুন সংশোধিত আইনে বলা হয়েছে, এই আইনে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, খ্রিষ্টান, জৈন ও পার্সিরা নাগরিকত্ব পাবে। তবে একটি শর্ত—২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে যারা এসেছে, তারাই নাগরিকত্ব পাবে। ওই সময়ের মধ্যে উল্লেখিত দেশ থেকে আসা ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা এই দেশে ৬ বছর থাকার পর ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। নাগরিকত্বের আবেদন পেলে সরকার বিবেচনা করে তাদের নাগরিকত্ব দেবে।

সংবাদমাধ্যমের খবরে আরও উল্লেখ করা হয়, ৩ জানুয়ারি রাজস্থানের এক সভায় বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন যে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি ও কংগ্রেস এই নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করছে। তিনি বলেন, ‘সব দলকে বলছি—এক ইঞ্চিও পিছিয়ে আসবে না বিজেপি। কেউ আটকাতে পারবে না। যত ইচ্ছা বিভ্রান্ত করুন। যুবকদের কাছে যাব, সংখ্যালঘুদের কাছে যাব। দেশের মানুষকে বলতে চাই, ধর্মের ভিত্তিতে দেশের বাঁটোয়ারা হওয়া উচিত নয়। এটা করেছিল কংগ্রেসই।’

এদিকে এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বাতিলের আন্দোলনের বিষয়ে পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে বিজেপিবিরোধী রাজনৈতিক দলের বৈঠক ডেকেছেন কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী। ১৩ জানুয়ারি এই বৈঠক হওয়ার কথা দিল্লিতে। কিন্তু এই সিএএ ও এনআরসি বাতিলের দাবিতে গত বুধবার বাম দল ও কংগ্রেসের ডাকে সাধারণ ধর্মঘটের দিনে পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলার কালিয়াচকের সুজাপুরে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। অভিযোগ, একপর্যায়ে একদল পুলিশ সুজাপুর বাসস্ট্যান্ডে ব্যাপক হামলা চালায়। এতে পুলিশের গাড়িসহ একাধিক গাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এরপর পুলিশ যে ভাঙচুর করে এবং অগ্নিসংযোগ করে, সেই ছবি ফাঁস হয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যদিও ওই দিন বাম দল বা কংগ্রেস ওই ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের সঙ্গে জড়িত নয় বলে দাবি করেছে। জেলা পুলিশ সুপার এই ভাঙচুরের সঙ্গে পুলিশ জড়িত থাকার কথাও স্বীকার করেন।