মোদির সঙ্গে মমতাও শুনলেন 'গো-ব্যাক'

বেলুর মঠে সন্ন্যাসীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: সংগৃহীত
বেলুর মঠে সন্ন্যাসীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: সংগৃহীত

কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের ১৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এখন কলকাতায়। আজ রোববার কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও থাকার কথা রয়েছে। অনুষ্ঠান শেষে রাজধানী নয়াদিল্লিতে ফিরে যাবেন মোদি।

কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের অনুষ্ঠানের আগে আজ সকালে বেলুর মঠের মূল মন্দিরে গিয়ে মঙ্গলারতি দেখার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদির। স্বামী বিবেকানন্দের স্মৃতিবাহী কক্ষে গিয়ে ধ্যান করবেন তিনি। পরে বেলুর মঠে আয়োজিত জাতীয় যুব অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিক নিবন্ধনের (এনআরসি) বিরোধে ভারতজুড়ে আন্দোলন এখন তুঙ্গে। পশ্চিমবঙ্গেও চলছে আন্দোলন। এই পরিস্থিতির মধ্যেই গতকাল শনিবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী মোদি দুই দিনের সফরে পা রাখেন কলকাতায়।

প্রধানমন্ত্রীর কলকাতায় আগমনকে মেনে নিতে পারেনি তৃণমূল কংগ্রেস, বাম দল, কংগ্রেস, এসইউসিআইসহ বিজেপি-বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো।

গতকাল সকাল থেকেই কলকাতার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মোদির আগমনের প্রতিবাদ জানিয়ে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে জড়ো হন। তাঁরা মোদির উদ্দেশে ‘গো-ব্যাক’ ধ্বনি দেন। প্রদর্শন করেন কালো পতাকা। দাহ করেন মোদির কুশপুত্তলিকা। এই ‘গো-ব্যাক’ ধ্বনি থেকে বাদ যাননি মমতাও।

গতকাল সন্ধ্যায় মোদি-বিরোধী এক প্রতিবাদ মিছিল হয় ধর্মতলায়। সেখানে কলকাতার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মোদির বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। এর কিছু দূরে রাণী রাসমণি অ্যাভিনিউতে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিবাদ সমাবেশ চলছিল। ওই সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। পরে ওই সমাবেশের সামনে আসেন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা মমতার উদ্দেশেও ‘গো-ব্যাক’ ধ্বনি দেন। মমতার উদ্দেশে তাঁরা বলেন, ‘মমতা মিরজাফর, মোদির দালাল। মমতা মোদির সঙ্গে বোঝাপড়া করে এসেছেন। তাঁর কথা শুনব কেন?’

প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের এসব কথায় ক্ষুব্ধ হন মমতা। তিনি বলেন, ‘১০০-২০০ লোক এনে আমাকে চোখ রাঙাবেন না। আমি ডাকলে লাখ লাখ ছাত্র চলে আসবে। আমাকে ভয় দেখাবেন না।’

এই ঘটনার জেরে পুরো পশ্চিমবঙ্গে দিনভর উত্তেজনা বিরাজ করে।

গতকাল মোদি যোগ দেন কলকাতার ওল্ড কারেন্সি ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে। এ ছাড়া তিনি কলকাতার মিলেনিয়াম পার্কে উপস্থিত থেকে উদ্বোধন করেন কলকাতার ঐতিহ্যবাহী হাওড়া সেতুর আলো ও ধ্বনি প্রকল্পের। এরপর তিনি মিলেনিয়াম পার্ক থেকে লঞ্চে করে যান ঠাকুর রামকৃষ্ণ দেব ও স্বামী বিবেকানন্দের স্মৃতিবাহী বেলুর মঠে। রাত কাটান বেলুর মঠের বিদেশিদের জন্য তৈরি অতিথিশালায়। রাতে শ্রীরামকৃষ্ণ, স্বামী বিবেকানন্দ ও সারদা মাকে নিবেদন করা ভোগ গ্রহণ করেন তিনি। ভোগে ছিল লুচি, বেগুন ভাজা, আলু ভাজা ও পায়েস।

মোদির সফর ঘিরে কলকাতাকে ঢেকে ফেলা হয়েছে নিরাপত্তার চাদরে।