পশ্চিমবঙ্গে দিলীপ ঘোষের মন্তব্য নিয়ে তোলপাড়

বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের একটি মন্তব্য ঘিরে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়িয়েছে। নদীয়া জেলার রানাঘাটে বিজেপি আয়োজিত এক সমাবেশে দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদের নামে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা হলে আসাম, উত্তর প্রদেশ ও কর্ণাটকের ন্যায় এই রাজ্যেও গুলি চালানো হবে।

দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘এ রাজ্যে ক্ষমতায় এলে আর সরকারি সম্পত্তি নষ্টকারীদের বরদাশত করা হবে না। গুলি করে মারব। সিএএ ও এনআরসিবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে রাজ্যের ৫০০-৬০০ কোটি রুপির সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা হয়েছে।’

দিলীপ ঘোষের মন্তব্য ঘিরে এরপর থেকে দল ও বিরোধী দল থেকেও একে একে সমালোচনা আসতে থাকে। বিজেপির নেতা ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বলেছেন, দিলীপ ঘোষ দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করেছেন। এর সঙ্গে দলের কোনো যোগ নেই।

বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু দিলীপ ঘোষের পক্ষে বলেন, ওই মন্তব্যে আপত্তির কোনো কারণ নেই।

তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এক ধাপ এগিয়ে বলেছেন, দিলীপ ঘোষ উসকানিমূলক কথা বলেছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত আগেই ওঁকে গুলি করে মারা।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘বাংলা এখনো ইউপি (উত্তর প্রদেশ) বা গুজরাট হয়নি। একটা আন্দোলনের জন্য ইউপিতে ২৩ জনকে গুলি করে মারা হয়েছে। বেঙ্গালুরুতেও মারা গিয়েছে। সেখানেও আমরা গিয়েছি। সাহায্য করেছি।’

কংগ্রেস নেতা ও পশ্চিমবঙ্গের বিরোধীদলীয় নেতা আবদুল মান্নান বলেছেন, সুস্থ মস্তিষ্কের কোনো ব্যক্তি কিছু বললে মন্তব্য দেওয়া যায়। দিলীপ ঘোষ কি সুস্থ?

সিপিএমের পলিট ব্যুরো সদস্য ও সাবেক সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘দিলীপ ঘোষের ওই মন্তব্যের জন্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এফআইআর করুক রাজ্য সরকার। না হলে আমরাই এফআইআর করব’।

দিলীপ ঘোষের ওই মন্তব্য নিয়ে আসামেও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। আসামের বিশিষ্ট সাহিত্যিক অনুরাধা শর্মা বলেছেন, বিজেপি নেতারা হতাশ। তাই সেই হতাশার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে দিলীপ ঘোষের মন্তব্যে। সিএএ ও এনআরসিবিরোধী আন্দোলন দেখে ঘাবড়ে গেছে বিজেপি।

আলফার নেতা অনুপ চেটিয়া বলেন, দায়িত্বশীল কোনো নেতা এই ভাষা ব্যবহার করতে পারেন না। এটা বাংলার সংস্কৃতিও নয়। তাই বাংলার মানুষের এর উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়া উচিত।

আসামের সংস্কৃতিকর্মী মঞ্জুলা হাজারিকা বলেন, সাহস থাকলে দিলীপ ঘোষ আসামে এসে এ কথা বলুক। তাঁর আদরযত্নের ব্যবস্থা আসামের আন্দোলনকারীরাই করবেন।