সিনেটে অভিশংসন বিচার শুরু হচ্ছে শিগগিরই

সিনেটে অভিশংসন বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
সিনেটে অভিশংসন বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন বিচার কার্যক্রম শিগগিরই শুরু হবে। আগামীকাল বুধবার ডেমোক্রেটিক পার্টি নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসনের আনুষ্ঠানিক অভিযোগের ওপর ভোট গ্রহণ করা হবে। এরপর এ সম্পর্কিত অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচার কার্যক্রম শুরুর জন্য পাঠানো হবে উচ্চকক্ষ সিনেটে।

এ সম্পর্কিত সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, আজ মঙ্গলবার ডেমোক্রেটিক পার্টির এক সভায় প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেন, আগামীকাল ভোট গ্রহণের পাশাপাশি সিনেটে অভিশংসন বিচারে ডেমোক্রেটিক কৌঁসুলি দলের সদস্যদের নামও জানিয়ে দেওয়া হবে।

গত মাসে প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনে দুটি অভিযোগ আনে প্রতিনিধি পরিষদ। এর একটি ক্ষমতার অপব্যবহার এবং অন্যটি কংগ্রেসের কাজে বাধা। কিন্তু এ অভিযোগ সিনেটে পাঠাতে দেরি করছিলেন পেলোসি। মূলত সিনেটে বিচারপ্রক্রিয়ার সময় নতুন সাক্ষ্য গ্রহণে সিনেটে রিপাবলিকান নেতা মিচ ম্যাককোনেল রাজি না হওয়াই এই বিলম্বের কারণ। অবশেষে পেলোসি এ সম্পর্কিত অভিযোগ সিনেটে পাঠাতে উদ্যোগ নিলেন। তবে ম্যাককোনেল বিচারের শুরুতেই নতুন সাক্ষী গ্রহণে সম্মত নন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। তবে পরে প্রয়োজনে সাক্ষ্য গ্রহণ করার একটি রাস্তা খোলা রেখেছেন তিনি।

সিনেটে রিপাবলিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় তারা শুরুতেই ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নির্দোষ ঘোষণার জন্য ভোট গ্রহণ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সিনেটে রিপাবলিকান পার্টির ৫৩ জন সদস্য রয়েছেন। কিন্তু এমন নির্দোষ প্রমাণের জন্য সিনেটে দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের প্রয়োজন পড়বে রিপাবলিকানদের। এখন পর্যন্ত কোনো রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অবস্থান না নিলেও এ ধরনের পদক্ষেপ কার্যকর হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে প্রতিনিধি পরিষদ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিশংসন অভিযোগ সিনেটে পাঠানোর পর বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।

বুধবারের ভোটের পর বৃহস্পতিবার থেকেই সিনেটে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হবে। তবে শুরুর কিছুদিন বিচারক ও সাক্ষীদের শপথ গ্রহণ, আনুষ্ঠানিকভাবে অভিশংসন অভিযোগ পাঠ ইত্যাদিতেই চলে যাবে। এমনকি আগামী সপ্তাহের শুরুর কয়েক দিনে শুনানি শুরুর তেমন সম্ভাবনা নেই বলে উল্লেখ করা হয়েছে সিএনএনের প্রতিবেদনে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ জুলাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির একটি ফোনালাপকে কেন্দ্র করে প্রথম বিতর্ক শুরু হয়। ওই ফোনালাপে আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর জন্য জেলেনস্কিকে চাপ দেন ট্রাম্প। একই সঙ্গে এ ধরনের তদন্ত শুরুকে হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কির আমন্ত্রণ ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ইউক্রেনের সামরিক সহায়তা তহবিল পাওয়ার বিষয়টিকে শর্ত হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা করার অভিযোগও রয়েছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করলে বারবার শমন জারি করেও প্রেসিডেন্টের নির্দেশের কারণে হোয়াইট হাউসের কোনো কর্মকর্তাকে প্রতিনিধি পরিষদে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য পাওয়া যায়নি। এ পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ তদন্তের পর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও কংগ্রেসের কাজে বাধা সৃষ্টির অভিযোগ আনে প্রতিনিধি পরিষদ। নিম্নকক্ষে অভিশংসিত হওয়ার পর এখন এর বিচারপ্রক্রিয়াটি সিনেটের আওতাধীন।