উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার দৃশ্য ধারণ করা ব্যক্তি গ্রেপ্তার

ইরানের তেহরানে বিধ্বস্ত ইউক্রেনের উড়োজাহাজের অংশবিশেষ। ছবি: রয়টার্স
ইরানের তেহরানে বিধ্বস্ত ইউক্রেনের উড়োজাহাজের অংশবিশেষ। ছবি: রয়টার্স

ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইউক্রেনের যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ ভূপাতিত করার দৃশ্য ভিডিও করা ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরান। গ্রেপ্তার ব্যক্তির বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে অভিযোগ আনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এক ইরানি সাংবাদিক দাবি করেছেন, ভুল ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

৮ জানুয়ারি তেহরানে যাত্রীবাহী উড়োজাহাজটি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়। এতে উড়োজাহাজের ১৭৬ আরোহীর সবাই নিহত হন। শুরুতে অস্বীকার করলেও পশ্চিমা চাপের মুখে ঘটনার দুদিন পর ইরান স্বীকার করে, মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ভেবে ভুল করে উড়োজাহাজটিতে তারা ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। এ ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে ইরান।

ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি জানান, বিশেষ আদালত এ–সংক্রান্ত তদন্তের বিষয়টি দেখবে। তিনি বলেন, এটা নিয়মিত এবং স্বাভাবিক কোনো মামলা নয়। পুরো বিশ্ব এই আদালতকে দেখবে। তিনি বলেন, যে ট্রিগার টেনেছে, সে–ই শুধু দায়ী নয়, এ ঘটনায় অন্যরাও দায়ী।

৩ জানুয়ারি ইরাকের বাগদাদে ইরানি জেনারেল কাশেম সোলাইমানিকে যুক্তরাষ্ট্র ড্রোন হামলায় হত্যার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। প্রতিশোধ হিসেবে ৮ জানুয়ারি ইরাকে অবস্থিত দুটি মার্কিন বিমানঘাঁটি আইন আল-আসাদ ও ইরবিলে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। ওই দিনই ইউক্রেনের উড়োজাহাজটিতে ভুল করে ইরান ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে।

উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উঠে আসার পর বিশ্লেষকেরা বলতে শুরু করেন, উড়োজাহাজটিতে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। তবে সবশেষ নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, উড়োজাহাজটিতে একটি নয়, পরপর দুটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। প্রথমটি আঘাতের ২০ সেকেন্ডের মধ্যে দ্বিতীয় ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করে।

ইরানি গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, ভিডিও করা ব্যক্তিকে ইরানের অভিজাত বাহিনী রেভল্যুশনারি গার্ড তুলে নিয়ে গেছে। তবে লন্ডনে অবস্থানরত নারিমান ঘারিব নামের এক ইরানি সাংবাদিক, যিনি ভিডিওটি শুরুতে পোস্ট করেছিলেন, তিনি দাবি করেছেন, ভুল ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ইরানি কর্তৃপক্ষ। তাঁর সূত্র নিরাপদে আছে। এক টুইটে তিনি বলেন, ‘তারা ভুল ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। ভিডিওটির সূত্র নিরাপদে আছে। আমি আপনাদের নিশ্চিত করছি, রেভল্যুশনারি গার্ড আরেকটি মিথ্যা সাজাচ্ছে। তারা একটি বাণিজ্যিক উড়োজাহাজের ১৭৬ আরোহীকে হত্যা করেছে।’

আরেকটি টুইটে নারিমান ঘারিব বলেন, ‘আমি জাস্টিন ট্রুডো এবং কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এ পরিস্থিতিতে পদক্ষেপ নিতে বলছি। তাঁরা যেন ইরানি কর্মকর্তাদের বলেন ভুল ব্যক্তিকে ছেড়ে দিতে। আমার সূত্র একজন বীর। তিনি নিরাপদে আছেন। তাদের কেন এই লোককে গ্রেপ্তার করার দরকার হলো?’