'ট্রাম্প চুক্তি'র প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান রুহানির

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। ছবি: রয়টার্স
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। ছবি: রয়টার্স

গতকাল বুধবার ইরানের পারমাণবিক সংকট নিরসনে নতুন ‘ট্রাম্প চুক্তি’র প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। তিনি বলেন, এটি একটি অদ্ভুত প্রস্তাব। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বরাবরই চুক্তির প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন করেন বলেও সমালোচনা করেন তিনি।

সম্প্রতি ইরানের মেজর জেনারেল কাশেম সোলাইমানিকে যুক্তরাষ্ট্রের হত্যার মধ্য দিয়ে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। এমন সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় রাষ্ট্রের স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তির স্থলে ট্রাম্প চুক্তি হওয়া উচিৎ। এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও তাঁর সঙ্গে সম্মত। ২০১৮ সালের ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে একতরফাভাবে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন ট্রাম্প। এরপর ইরানকে অর্থনৈতিকভাবে চাপে ফেলতে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন তিনি।

ট্রাম্পের প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, ‘লন্ডনের প্রধানমন্ত্রী কীভাবে চিন্তা করেন আমি জানি না। তিনি পারমাণবিক চুক্তি সরিয়ে রেখে ট্রাম্পের পরিকল্পনা কার্যকর করতে বলেছেন। আপনি ভুল পদক্ষেপ নিলে আপনাদেরই ক্ষতি হবে। সঠিক পথ ধরেন। ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তিতে ফেরাই হলো সঠিক পথ।’

২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, রাশিয়া, জার্মানি ও ফ্রান্সের কাছে ইউরেনিয়াম প্রকল্প সীমিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল ইরান। চুক্তি অনুযায়ী ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি না করার প্রতিশ্রুতি দেয় তেহরান। ওবামা আমলে স্বাক্ষরিত এই চুক্তিকে ‘ক্ষয়িষ্ণু ও পচনশীল’ আখ্যা দিয়ে ২০১৮ সালের মে মাসে তা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর নভেম্বর থেকে তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল শুরু করে ওয়াশিংটন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই চুক্তির প্রতিশ্রুতি থেকে পর্যায়ক্রমে সরে যায় তেহরান। সবশেষ ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাশেম সোলাইমানিকে হত্যার পর ওই চুক্তি পুরোপুরি না মানার ঘোষণা দেয় ইরান। কিন্তু এখন ইরান বলছে, আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেই ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তির বিধিনিষেধ মানবে দেশটি।

গতকাল রুহানি বলেন, আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) তত্ত্বাবধানে পারমাণবিক ইস্যুতে ইরান যা করেছে, তা ওলটানো সম্ভব। রুহানি এ সময় আবারও বলেন, মধ্যপ্রাচ্য থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হলেই এই অঞ্চলে শান্তি আসবে।

ইরানের ওপর থেকে যত দ্রুত সম্ভব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করা হলে তেহরান পাল্টা পদক্ষেপ নেবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রুহানি।