নির্ভয়া ধর্ষণ-হত্যা: চারজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর ১ ফেব্রুয়ারি সকালে

(বাঁ থেকে) মুকেশ সিং, বিনয় শর্মা, অক্ষয় কুমার সিং ও পবন গুপ্ত। ছবি: এনডিটিভির সৌজন্যে
(বাঁ থেকে) মুকেশ সিং, বিনয় শর্মা, অক্ষয় কুমার সিং ও পবন গুপ্ত। ছবি: এনডিটিভির সৌজন্যে

২০১২ সালে দিল্লিতে ‘নির্ভয়া’ ধর্ষণ ও হত্যায় দোষী সাব্যস্ত চার আসামির মৃত্যুদণ্ড আগামী ১ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় সকাল ৬টায় কার্যকরের আদেশ দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার চার অভিযুক্তের একজনের ক্ষমা চেয়ে করা আবেদন ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ খারিজ করে দিলে ফাঁসি কার্যকরের এ নতুন সময় ধার্য করে আদেশ দেওয়া হয়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দের কাছে ক্ষমা চেয়ে আবেদন করেছিলেন অভিযুক্ত মুকেশ সিং। রাষ্ট্রপতি তাঁর এ আবেদন খারিজ করে দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নতুন এ পরোয়ানা জারি হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য অভিযুক্তরা হলেন বিনয় শর্মা, অক্ষয় কুমার সিং ও পবন গুপ্ত।

ভারতের আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির কাছে করা ক্ষমার আবেদন খারিজ থেকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সময়ের মধ্যে অন্তত দু সপ্তাহ ব্যবধান থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ হিসাবেই নতুন এ পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

দিল্লির তিহার জেলেই এ দণ্ড কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। গত সপ্তাহে আদালত ২২ জানুয়ারি মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দিলেও কারা কর্তৃপক্ষ সব আসামির ক্ষমা প্রার্থনার উত্তর আসার আগ পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে অপারগতা জানায়। আজ শুক্রবার চার অভিযুক্তের একজনের ক্ষমা চেয়ে করা আবেদন রাষ্ট্রপতি ফিরিয়ে দিলে দণ্ড কার্যকরের নতুন এ তারিখ ঘোষণা করা হয়। অন্য তিন অভিযুক্ত এখনো ক্ষমা প্রার্থনা করেননি। ১ ফেব্রুয়ারির আগে যদি তাঁদের কেউ আবার আবেদন করেন, তাহলে একইভাবে বিধি অনুযায়ী আবেদন খারিজ হওয়ার দিন থেকে অন্তত ১৪ দিন করে দণ্ড কার্যকরের তারিখ পিছিয়ে যাবে।

২০১২ বছরের ১৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে চলন্ত বাসে ২৩ বছর বয়সী এক মেডিকেল ছাত্রী গণধর্ষণের শিকার হন। ওই বছরের ২৯ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত সাহসের পরিচয় দেওয়ায় ভারতের গণমাধ্যম তাঁকে ‘নির্ভয়া’ নামে অভিহিত করে। এই ‘নির্ভয়া’ ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সে সময় ভারতজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। দোষীদের শাস্তির দাবিতে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়। ঘটনার কয়েক দিন পর বাসের চালকসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১৩ সালের ১১ মার্চ তিহার জেলে থাকা অবস্থায় প্রধান আসামি বাসচালক রাম সিং মারা যান। তিনি আত্মহত্যা করেন বলে ধারণা করা হয়। এ ঘটনার আরেক আসামি কিশোর হওয়ায় তাকে তিন বছরের জন্য অপরাধ সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। সংশোধন কেন্দ্রে তিন বছর কাটানোর পর ছাড়া পায় সে। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় বাকি চার আসামির মৃত্যুদণ্ড আগামী ১ ফেব্রুয়ারি কার্যকর হচ্ছে।