সিএএ প্রত্যাহারের প্রস্তাব কাল পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় উঠছে

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য বিধানসভা। ছবি: বিধানসভার ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য বিধানসভা। ছবি: বিধানসভার ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

ভারতের বহুল আলোচিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) প্রত্যাহারের প্রস্তাব কাল সোমবার পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য বিধানসভায় তোলা হচ্ছে।

শাসকদল তৃণমূল, বিরোধী দল কংগ্রেস ও বাম দল সিএএ প্রত্যাহারের দাবিতে প্রস্তাবটি বিধানসভায় তুলতে যাচ্ছে।

ইতিমধ্যে ভারতের কেরালা, পাঞ্জাব ও রাজস্থানে সিএএ প্রত্যাহারের দাবিতে রাজ্য বিধানসভায় প্রস্তাব পাস হয়েছে।

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) ও জাতীয় জনসংখ্যা নিবন্ধন (এনপিআর) নিয়ে এখন উত্তপ্ত ভারতের রাজনীতি। রাজ্যে রাজ্যে চলছে এসব আইন বাতিলের আন্দোলন। দাবি উঠেছে—ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে এসব আইনের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক বিভাজন মানবে না দেশবাসী। এই আইনগুলো বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা মুকুল রায় গত বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার তারাপীঠে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জানান, পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি হচ্ছে না। তবে সিএএ হবে। তিনি বলেন, ‘আমি খুব পরিষ্কারভাবে বলছি, এনআরসি হচ্ছে না বাংলায়। এখন যাঁরা ভ্রান্ত প্রচার করছেন, তাঁরা ভুল করছেন, অন্যায় করছেন, ভারতের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছেন।’

বক্তব্যের ব্যাপারে গত শুক্রবার কলকাতার একটি দৈনিক জানতে চাইলে মুকুল রায় একই কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমি ১০০ শতাংশ নিশ্চিত হয়ে বলছি, পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি হচ্ছে না।’

যদিও মুকুল রায়ের এই মন্তব্যকে আস্থায় নেয়নি তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস ও বাম দল। তাদের কথা, এনআরসি নিয়ে বিজেপি মিথ্যে প্রচার করছে। আন্দোলন বন্ধ করার নতুন ফন্দি করছে।

মুকুল রায়ের এই মন্তব্য নিয়ে তাঁর নিজ দলেও পরস্পরবিরোধী বক্তব্য রয়েছে।

গত শুক্রবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটায় এক সংবাদ সম্মেলনে মুকুল রায়ের মন্তব্য নাকচ করেন। দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘এনআরসি সুপ্রিম কোর্ট চেয়েছে। আমি বলার কে? দেশের একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আমি সুপ্রিম কোর্টের ওই নির্দেশ মানতে বাধ্য। আমি আদালতের রায়কে সম্মান জানিয়ে এনআরসির সপক্ষে পথে নেমেছি।’

একই সুরে কথা বলেছেন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘এনআরসি কার্যকর না করার ব্যাপারে মুকুল রায়ের কাছে খবর থাকতে পারে। কিন্তু আমার কাছে নেই। আমরা শুধু সিএএর পক্ষে প্রচার চালাচ্ছি।’

তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘বিজেপি বুঝেছে মানুষ আর সিএএ, এনআরসি, এনপিআর চায় না। এই রাজ্যে ধর্মীয় বিভাজন চায় না। ওরা সকালে এক কথা বলে, দুপুরে আরেক কথা, আবার রাতে বলে অন্য কথা। ওদের কথা মানুষ বিশ্বাস করছে না।’