গৃহবন্দী কাশ্মীরি নেতা ওমর আবদুল্লাহর ছবি দেখে বিস্মিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা

গৃহবন্দী হওয়ার আগে ও পরে কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। ছবি: এএফপি ও টুইটার
গৃহবন্দী হওয়ার আগে ও পরে কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। ছবি: এএফপি ও টুইটার

জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ গত আগস্ট থেকেই গৃহবন্দী। গৃহবন্দী এই নেতার একটি ছবি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ওমরের সেই ছবি দেখে যারপরনাই বিস্মিত হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবিটি টুইটারে শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, এই ওমর আবদুল্লাহকে তিনি চিনতে পারছেন না।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওমর আবদুল্লাহর ছবিটি টুইট করে মমতা লিখেছেন, ‘এই ছবিতে তো আমি ওমরকে চিনতেই পারিনি। তাঁর জন্য আমার দুঃখ হচ্ছে। আমাদের গণতান্ত্রিক দেশে এমন কিছু দেখতে হচ্ছে, এটা দুর্ভাগ্যজনক। কখন বন্ধ হবে এসব?’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই ছবিতে দেখা গেছে, গলাবন্ধ শীতের পোশাক আর প্রায় বুকসমান দাঁড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহর ছেলে ওমর আবদুল্লাহ। গত বছরের ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করার পর অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে শতাধিক রাজনীতিবিদকে গৃহবন্দী করে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই তালিকায় আছেন রাজ্যের তিন সাবেক মুখ্যমন্ত্রীও।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টুইট
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টুইট

মমতার পাশাপাশি ওমর আবদুল্লাহর এই ছবি টুইট করেছেন জম্মু-কাশ্মীরের আরেক সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিও। ওমর আবদুল্লাহর মতো তিনিও গৃহবন্দী। এ কারণে টুইটার অ্যাকাউন্টটি মেহবুবার মেয়ে ইলতিজা মুফতিই দেখভাল করে থাকেন। টুইটে বলা হয়েছে, যাঁরা ওমর আবদুল্লাহর দীর্ঘ বন্দিদশার বিরোধিতা করছিলেন, ছবিটি তাঁদের জন্য। পরিবার ও প্রিয়জনের কাছ থেকে প্রায় ৬ মাস দূরে রাখার কারণে তাঁর কী অবস্থা হয়েছে, সেটি এই ছবি দেখেই বোঝা যাচ্ছে।

একই ছবি টুইট করেছেন সিপিআইএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। তিনি লিখেছেন, একজন সাবেক মুখ্যমন্ত্রীকে কীভাবে কোনো অভিযোগ না থাকা সত্ত্বেও গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। এই ছবি কেন্দ্রীয় সরকারের চিত্রই তুলে ধরে।

সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের পর থেকে জম্মু-কাশ্মীরের ওপর একাধিক বিধিনিষেধ চাপানো হয়েছে। ইন্টারনেট, মোবাইল ব্যবহার, জমায়েত, জনসভা, পদযাত্রা—সবকিছুর ওপরই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। যদিও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে সম্প্রতি মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু যে রাজনীতিবিদদের গৃহবন্দী করা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে অধিকাংশের অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। জননিরাপত্তা আইন বা পাবলিক সেফটি আইন অনুযায়ী নেতাদের গৃহবন্দী রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার, যে আইনে বিচার ছাড়াই যে–কাউকে আটক রাখা যায়।