শক্তিশালী বিরোধীপক্ষই গণতন্ত্রের মূল শর্ত: অভিজিৎ

অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ভারতের গণতন্ত্র রক্ষার জন্য শক্তিশালী একটি বিরোধী পক্ষের প্রয়োজন। শক্তিশালী বিরোধী পক্ষ ছাড়া দেশের গণতন্ত্র সুসংহত হয় না। তাই গণতন্ত্রে ভারসাম্য রাখতে সরকারেরও উচিত বিরোধী শক্তিকে মর্যাদা দেওয়া।

গতকাল রোববার ভারতের রাজস্থান রাজ্যের রাজধানী জয়পুরে ‘জয়পুর লিটারেচর ফেস্টিভ্যালে’ যোগ দিয়ে এ কথা বলেন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ সোমবার সন্ধ্যায় কলকাতায় ‘লিটারেচর ফেস্টিভ্যালে’ যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে এই অর্থনীতিবিদের।

অভিজিৎ বলেছেন, শাসক দলকে পরিচালিত করতে শক্তিশালী বিরোধী দল অপরিহার্য। ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে আগেই মুখ খুলেছিলেন অভিজিৎ। এবার তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে বলেন, কোনো শক্তিশালী বিরোধী পক্ষ নেই মানে সরকারের ওপরে কোনো চাপ নেই।

দেশজুড়ে সিএএ-বিরোধী জোর আন্দোলন চললেও আজও দেশের বিরোধী দল এক হতে পারেনি। সব দলই বিচ্ছিন্নভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। ১৭ জানুয়ারি দিল্লিতে সিএএ-বিরোধী দলগুলোকে একজোট করার উদ্যোগ নেয় কংগ্রেস। তবে সেখানে মমতার তৃণমূল কংগ্রেসসহ আরও দু-একটা দল যোগ দেয়নি। ফলে এটা স্পষ্ট হয়ে পড়ে, সিএএ-বিরোধী আন্দোলন চললেও বিরোধীরা একজোট হয়ে এই আন্দোলন চালাতে পারছে না। বিরোধীদের এই অনৈক্যের সুযোগে-সুবিধা নিচ্ছে শাসক দল বিজেপি। যদিও এর মধ্যে ভারতের কেরালা, পাঞ্জাব ও রাজস্থান রাজ্যের বিধানসভায় সিএএ প্রত্যাহার করার প্রস্তাব পাস হয়েছে।

আজ সোমবার একইভাবে এই প্রস্তাব উঠছে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায়ও। এসবের পরও এখনো একজোট হতে পারছে না বিজেপি-বিরোধীরা।

অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ভারতে থাকলে তিনি নোবেল পেতেন বলে মনে করেন না। তিনি বলেন, ভারতে রয়েছে প্রচুর প্রতিভাবান মানুষ। কিন্তু কাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। এত কাজ একার সম্ভব হয় না। পরিসর বাড়লে একসঙ্গে অনেকের সাহায্য পাওয়া যায়। তাঁর এই নোবেল জয়ের কৃতিত্বের বেশির ভাগটাই তিনি দিয়েছেন মার্কিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমআইটিকে। অভিজিৎ বলেন, ‘ওখান থেকেই প্রচুর উপকৃত হয়েছি। ওখানে বিশ্বের সেরা পড়ুয়ারা গবেষণা করেন। তাই আমার কাজে তাঁদের অনেকের কাছ থেকে প্রচুর সাহায্য পেয়েছি। তাই আমার কাজে তাঁদের অবদান আমাকে এই নোবেল জয়ে সাহায্য করেছে।’

আগামীকাল মঙ্গলবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ‘ডি–লিট’ প্রদান করা হবে অভিজিৎ বিনায়ককে। এ উপলক্ষে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।