কলকাতার বইমেলায় বাংলাদেশের ৪১টি প্রকাশনা সংস্থা

ঘণ্টা বাজিয়ে আজ কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার উদ্বোধন করেন ভারতে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত কুদাসেভ নিকোলাই রিশাতোভিচ। মঞ্চে তাঁর পাশে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
ঘণ্টা বাজিয়ে আজ কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার উদ্বোধন করেন ভারতে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত কুদাসেভ নিকোলাই রিশাতোভিচ। মঞ্চে তাঁর পাশে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

কলকাতার ঐতিহ্যবাহী আন্তর্জাতিক বইমেলার উদ্বোধন করা হলো আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। এই বইমেলা এবার ৪৪ বছরে পা দিয়েছে। এবারের বইমেলার থিম কান্ট্রি রাশিয়া। ঘণ্টা বাজিয়ে আজ বইমেলার উদ্বোধন করেছেন ভারতে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত কুদাসেভ নিকোলাই রিশাতোভিচ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ কলকাতার বিশিষ্টজনেরা। ছিলেন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকেরাও।

এবারেরও বইমেলা বসছে সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে।

বইমেলা উদ্বোধনের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কলকাতার বইমেলা বৈচিত্র্যের মধ্যে এক ঐক্যের বার্তা বয়ে নিয়ে আসে। এই বইমেলা দেশে দেশে মৈত্রী বন্ধনের সেতু গড়ে তোলে। তাই আজও কলকাতার বইমেলা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত।

আজ মেলা উদ্বোধনের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতার লেখা ১৩টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এই নিয়ে মমতার লেখা ১০১টি বই প্রকাশিত হলো। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন বইমেলার আয়োজক সংস্থা পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়।

বইমেলার উদ্বোধন করে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক সুদূর অতীত থেকে। এবার এই বইমেলার রাশিয়া অংশীদার হতে পেরে গর্বিত। এই বইমেলা আমাদের দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীর করবে। আমাদের এই মৈত্রী বন্ধন আরও দৃঢ় হবে।’

এবারের এই বইমেলায় যোগ দিয়েছে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২০টি দেশ। এর মধ্যে আছে রাশিয়া, কোস্টারিকা, স্পেন, স্কটল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, গুয়াতেমালা,আর্জেন্টিনা, জাপান, হাঙ্গেরি, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, মেক্সিকো, ভিয়েতনাম ও পেরু। এসব দেশ থেকে আসার কথা কবি, সাহিত্যিক ও লেখকদের। তাঁরা যোগ দেবেন এই বইমেলায় আয়োজিত সাহিত্য উৎসবে।

এবারের বইমেলায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন তৈরি হয়েছে শান্তিনিকেতনের বাংলাদেশ ভবনের আদলে। এই প্যাভিলিয়নে ঠাঁই পাবে বাংলাদেশের ৪১টি প্রকাশনা সংস্থা। এর মধ্যে নয়টি থাকছে সরকারি প্রকাশনা সংস্থা। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি বইমেলার সমাপ্তি দিনে বইমেলায় উদ্‌যাপিত হবে বাংলাদেশ দিবস। ওই দিনে বাংলাদেশ থেকে যোগ দেবে বাংলাদেশের প্রথিতযশা কবি-সাহিত্যিক -লেখক ও বিভিন্ন স্তরের বুদ্ধিজীবীসহ মন্ত্রী এবং সাংসদেরা। আগামী বছর বইমেলার থিম কান্ট্রি হবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ ঘিরে আগামী বছরের বইমেলা উৎসর্গ হবে বঙ্গবন্ধুর নামে।

শান্তিনিকেতনের বাংলাদেশ ভবনের আদলে কলকাতা বইমেলায় তৈরি হয়েছে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
শান্তিনিকেতনের বাংলাদেশ ভবনের আদলে কলকাতা বইমেলায় তৈরি হয়েছে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

এবারের এই বইমেলায় কলকাতাসহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের ৬০০ প্রকাশনা সংস্থা যোগ দিয়েছে। আরও যোগ দিয়েছে ২০০টি লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশনা সংস্থা।

বইমেলায় ঢোকা ও বের হওয়ার জন্য থাকছে নয়টি প্রবেশপথ। বইমেলায় সদ্য প্রয়াত সাহিত্যিক নবনীতা দেবসেন এবং বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব গিরিশ কারনাডের স্মরণে তৈরি করা হয়েছে দুটি প্যাভিলিয়ন। লিটল ম্যাগাজিন প্যাভিলিয়নের নামকরণ করা হয়েছে কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের নামে। আর প্রেস কর্নারের নামকরণ করা হয়েছে দৈনিক বর্তমানের প্রয়াত সম্পাদক শুভা দত্তের নামে। সাহিত্যিক অদ্রীশ বর্ধনের নামে মুক্ত মঞ্চের নামকরণ করা হয়েছে।

এবারের বইমেলার মূল স্লোগান ‘বই কিনুন, লাইব্রেরি জিতুন’। বইমেলায় আগত বইপ্রেমীদের জন্য লটারির আয়োজন করা হয়েছে প্রতিদিন। লটারি বিজেতারা প্রতিদিন পাবেন ১৫ হাজার রুপির বই। পাঁচজন সেরা বিজয়ীকে দেওয়া হবে ২৫ হাজার রুপির বই এবং সেরা বিজেতা পাবেন ব্যক্তিগত গ্রন্থাগার গড়ার জন্য বই।