রাখাইনে আবার ইন্টারনেট বন্ধ

রাখাইনে হত্যা ও দমন-পীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে মিয়ানমার। রয়টার্স ফাইল ছবি
রাখাইনে হত্যা ও দমন-পীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে মিয়ানমার। রয়টার্স ফাইল ছবি

রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধ এবং তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) নির্দেশনা সত্ত্বেও রাখাইনে হত্যা ও দমন–পীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে মিয়ানমার। সর্বশেষ ওই রাজ্যে আবারও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির সরকার।

মিয়ানমারে শীর্ষস্থানীয় টেলিকম প্রতিষ্ঠান নরওয়েভিত্তিক টেলিনর গ্রুপ গত সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছে, মিয়ানমারের যোগাযোগ ও পরিবহন মন্ত্রণালয় রাখাইন ও চিন রাজ্যের পাঁচটি শহরে আবারও তিন মাসের জন্য ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে।

এর আগে রাখাইনের মংডু, বুচিডং, রাচিডং ও মায়েবন এবং চিনের একটি শহরে এক মাস ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রাখে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। সরকারি বাহিনীর সঙ্গে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সশস্ত্র সংগঠনগুলোর সংঘাত নিরসনে শান্তি আলোচনা শুরু হওয়ার পর গত সেপ্টেম্বরে আংশিকভাবে এই দুই রাজ্যে ইন্টারনেট সংযোগ সচল করা হয়। এ ছাড়া আরও চারটি শহরে গত জুনে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়। সেগুলোতে এখনো ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্নই রয়েছে।

বিবৃতিতে টেলিনর গ্রুপ বলেছে, সরকারি কর্মকর্তারা ‘নিরাপত্তা ও জনস্বার্থের’ কথা বলে ইন্টারনেট বন্ধ রাখতে বলেছেন।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র তুন তুন নাই গতকাল মঙ্গলবার টেলিফোনে বলেন, ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধের সিদ্ধান্তের বিষয়ে সেনাবাহিনীর কিছু জানা নেই।

যেসব এলাকায় ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছে, ওই সব এলাকার জনপ্রতিনিধিরা বলেছেন, এই পদক্ষেপের ফলে স্থানীয় ব্যবসা–বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমনকি সংঘাতকবলিত গ্রামগুলোয় সহযোগিতা পৌঁছানোও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। মিয়ানমারের পার্লামেন্টে রাচিডংয়ের জনপ্রতিনিধি খিন স ওয়াই বলেন, ‘সংঘাতের কারণে কিছু গ্রামবাসী ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। তারা কোনো বিপদে পড়লে কিংবা তাদের খাদ্য বা অন্য সহযোগিতার প্রয়োজন হলে আমরা ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারি এবং সে অনুযায়ী তাদের সহযোগিতা করি।’

রাখাইনভিত্তিক একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমের প্রধান সম্পাদক অং মার্ম ওউ বলেন, ইন্টারনেট বন্ধের কারণে সংবাদ পরিবেশনে সমস্যা হচ্ছে।

এ বিষয়ে কথা বলতে মিয়ানমারের যোগাযোগ ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

রাখাইনে সাম্প্রতিক সময়ে সহিংসতা আবারও বেড়েছে। গত মাসের শুরুর দিকে এ রাজ্যের একটি রোহিঙ্গা গ্রামে বিস্ফোরণে চার শিশু নিহত হয়। পরে সেনাদের ছোড়া গোলায় এক অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ দুই নারী নিহত হন, সাতজন আহত হন। গত ২৩ জানুয়ারি আইসিজের আদেশ দেওয়ার দুই দিন পর শেষের ঘটনাটি ঘটে।