'বরিসও বোঝেন না জলবায়ু পরিবর্তন'
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে জলবায়ু পরিবর্তনে বিশ্বাস করেন না, তা অনেকেরই জানা। তিনি প্রকাশ্যে জলবায়ু পরিবর্তনকে ‘ধাপ্পাবাজি’ মন্তব্য করেছেন। তবে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও যে জলবায়ু পরিবর্তন বোঝেন না, তা এবারই জানা গেল। এতে অবশ্য অনেকেরই অবাক হওয়ার কথা। কারণ, পরিবেশের সুরক্ষায়, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বরিস নির্বাচনী প্রচার–প্রচারণায় নানা পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়ে ভোটারদের মনোযোগ কেড়েছেন।
বরিস যে জলবায়ু পরিবর্তন বোঝেন না, তা দাবি করেছেন যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির সাবেক এমপি ক্লেয়ার ও’নিল। তিনি সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের সরকারে ব্যবসা, জ্বালানি ও শিল্প কৌশল দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। গত শুক্রবার ক্লেয়ার ও’নিল বিবিসি রেডিও ফাইভ লাইভ অনুষ্ঠানে দাবি করেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তন কী, সেটাই বোঝেন না। কাজেই বরিসের প্রতিশ্রুতিতে না গলে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
বিশ্বজুড়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের স্বভাব ও আচরণের সঙ্গে দুজন নেতার মিল খুঁজে পান অনেকে। তাঁদের একজন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস, অপরজন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো। বলসোনারোকে অনেকে ‘গ্রীষ্মমণ্ডলের ট্রাম্প’ নামে ডাকেন। তবে এ দুজনের মধ্যে ট্রাম্প সবচেয়ে পছন্দ করেন বরিসকে। তাঁর এই পছন্দের কথা অনেকবারই প্রকাশ্যে এসেছে।
বিবিসির অনুষ্ঠানে ক্লেয়ার ও’নিল বলেন, ‘ব্রিটিশ ভোটার, বিশ্বনেতা, মন্ত্রী, এমপি, কর্মজীবী, এমনকি পরিবারের সদস্য—সবার প্রতি আমার পরামর্শ হলো, বরিসের প্রতিশ্রুতির বিষয়ে সাবধান। তিনি প্রতিশ্রুতি দিলে তা লিখিত নিন, একজন আইনজীবী নিয়োগ করুন এবং নিশ্চিত হোন যে ব্যাংকে আপনার জমানো অর্থ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী অনেক বছর ধরেই অনেক উষ্ণ প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে স্বীকার করেছেন যে তিনি জলবায়ু পরিবর্তন বোঝেন না।’
উল্লেখ্য, স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোয় আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে ২৬তম জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন (কপ–২৬)। এই সম্মেলনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে গত সেপ্টেম্বরে নিয়োগ পান ক্লেয়ার ও’নিল। তবে ওই মাসেই তিনি ঘোষণা দেন, ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হবেন না। যুক্তরাজ্য সরকার গত ৩১ জানুয়ারি তাঁকে কপ–২৬–এর প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সরিয়ে দেয়। বরিসের সরকারের যুক্তি, পদটি মন্ত্রী পদমর্যাদার। কাজেই কোনো মন্ত্রীকেই এতে নিয়োগ দিতে হবে।