মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে নির্ভয়ার ধর্ষক-খুনিরা সময় পেল ৭ দিন

(বাঁ থেকে) মুকেশ সিং, বিনয় শর্মা, অক্ষয় কুমার সিং ও পবন গুপ্ত। ছবি: এনডিটিভির সৌজন্যে
(বাঁ থেকে) মুকেশ সিং, বিনয় শর্মা, অক্ষয় কুমার সিং ও পবন গুপ্ত। ছবি: এনডিটিভির সৌজন্যে

ভারতের দিল্লিতে নির্ভয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত আসামিরা মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে ৭ দিন সময় পেয়েছেন। দিল্লি হাইকোর্ট আজ বুধবার এক আদেশে এ কথা বলেছেন। এর আগে নিম্ন আদালত আসামিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিরুদ্ধে অনির্দিষ্টকালের স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন। এর বিরুদ্ধে সরকারপক্ষের করা আরজি আমলে নিয়ে দিল্লি হাইকোর্ট এ আদেশ দেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, বিচারক সুরেশ কাইত এ আদেশ দেন। তিনি বলেন, ‘দিল্লি কারাগারের নিয়মে এ কথা বলা নেই যে এক আসামির করা ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন যদি আটকে থাকে, তবে তার জন্য অন্য আসামিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরও থমকে যাবে।’

এদিকে নির্ভয়ার মা সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমি খুশি হয়েছি যে উচ্চ আদালত অন্তত এই প্রক্রিয়ার একটি সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। আসামিরা এই আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিলম্ব করছিল, এখন এটি এক সপ্তাহের মধ্যেই শেষ করতে হবে।’

নির্ভয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত আসামিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার কথা ছিল ১ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় সকাল ছয়টায়। কিন্তু এর ঠিক আগের দিন মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দিনক্ষণ বাতিল করা হয়। এক আসামির করা ক্ষমা প্রার্থনার আরজির কারণে দিল্লির আদালত এই আদেশ দিয়েছিলেন।

২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে চলন্ত বাসে ২৩ বছর বয়সী এক মেডিকেল ছাত্রী গণধর্ষণের শিকার হন। ওই বছরের ২৯ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগমুহূর্ত পর্যন্ত সাহসের পরিচয় দেওয়ায় ভারতের গণমাধ্যম তাঁকে ‘নির্ভয়া’ নামে অভিহিত করে।

এই ‘নির্ভয়া’ ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সে সময় ভারতজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়। ঘটনার কয়েক দিন পর বাসের চালকসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১৩ সালের ১১ মার্চ তিহার জেলে থাকা অবস্থায় প্রধান আসামি বাসচালক রাম সিং মারা যান। তিনি আত্মহত্যা করেন বলে ধারণা করা হয়। এ ঘটনার আরেক আসামি কিশোর হওয়ায় তাকে তিন বছরের জন্য অপরাধ সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। সংশোধন কেন্দ্রে তিন বছর কাটানোর পর ছাড়া পায় সে। এই মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার অভিযুক্ত হলেন মুকেশ সিং, বিনয় শর্মা, অক্ষয় সিং ও পবন গুপ্ত।

দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া শেষে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় এই চার আসামির মৃত্যুদণ্ড গত ১ ফেব্রুয়ারি কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আসামিরা আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার সেটিও পিছিয়ে যায়।