ছয় মাস পার করল অবরুদ্ধ কাশ্মীর

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

অবরুদ্ধ কাশ্মীর বুধবার ছয় মাস পূর্ণ করল। গত বছরের ৫ আগস্ট সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করার পাশাপাশি জম্মু-কাশ্মীর দ্বিখণ্ডিত হয়েছিল। রাজ্যের মর্যাদা হারিয়েছিল কাশ্মীর। সেই থেকে উপত্যকার বন্দিদশা অব্যাহত। গৃহবন্দী আছেন সাবেক এই রাজ্যের তিন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা, ওমর আবদুল্লা ও মেহবুবা মুফতি।

কবে তাঁরা মুক্ত হবেন, কবে প্রত্যাহৃত হবে উপত্যকার যাবতীয় নিষেধাজ্ঞা এখনো কারও জানা নেই। কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্রা আজ বুধবার তাই প্রশ্ন করেছেন, আমরা কি এখনো গণতান্ত্রিক দেশ?

আজ ভারতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় কংগ্রেস দাবি জানায়, ফারুক আবদুল্লাকে সংসদে হাজির করাতে স্পিকার উদ্যোগী হোন। স্পিকার কোনো উত্তর দেননি। বিরোধীরা তাই সভার ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখান। তাঁরা ‘গণতন্ত্র বাঁচাও’, ‘সংবিধান বাঁচাও’ স্লোগান দেন।

প্রিয়াঙ্কা টুইট করে বলেন, ছয় মাস হয়ে গেল তিনজন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী গৃহবন্দী। তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ কিন্তু নেই। লক্ষাধিক মানুষ অবরুদ্ধ। তিনি বলেন, ‘ছয় মাস আগে আমরা জানতে চেয়েছিলাম কত দিন এই অবস্থা চলবে। এখন জানতে চাইছি, আমরা কি এখনো গণতন্ত্রী?’

অবরুদ্ধতার ছয় মাস উপলক্ষে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির কন্যা ইলতিজা মুফতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, গণতন্ত্রে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অনির্দিষ্টকালের জন্য বিনা কারণে বন্দী রাখা যায় না। কিন্তু যে দেশে নয় বছরের বাচ্চার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা আনা হয়, সে দেশে এই অবস্থা অস্বাভাবিক নয়।

ইংরেজি দৈনিক দ্য হিন্দুকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে ইলতিজা মুফতি বিচার ব্যবস্থার প্রতি কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। মায়ের মুক্তির জন্য আদালতের দ্বারস্থ হবেন কি না জানতে চাইলে ইলতিজা বলেন, কোন আদালত? যে আদালত কাশ্মীর প্রসঙ্গ এলেই বোবা-কালা হয়ে যায়? তিনি বলেন, কাশ্মীরের মানুষের দিক থেকে আদালত মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। ছয় মাস কেটে গেলেও ইন্টারনেট ব্যবস্থা চালু করার জন্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়ার সাহসও আদালতের নেই।

তিন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও বিভিন্ন দলের ১৭ জন শীর্ষ নেতা এখনো উপত্যকায় বন্দী জীবন কাটাচ্ছেন। কতজন সাধারণ মানুষ বন্দী, তার কোনো হিসেব কোথাও নেই। সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করার সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে বহু মামলা দায়ের হয়েছে। ছয় মাস কেটে গেলেও কবে সেই সব মামলা শোনা হবে তাও এখনো অজানা।