সাজা এড়াতে পারলেন না তিনি

মোহাম্মদ আবদুল শকুর
মোহাম্মদ আবদুল শকুর

স্ত্রী ও দুই কন্যাসন্তানকে খুন করে যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়েছিলেন মোহাম্মদ আবদুল শকুর। একপর্যায়ে আত্মগোপন করেন ভারতে। তবে ব্রিটিশ বিচারব্যবস্থার হাত থেকে বাঁচতে পারেননি তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের আদালত শকুরকে ৪০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।

ভারতে ও যুক্তরাজ্যে ইতিমধ্যে সাড়ে ছয় বছর কারাগারে কাটিয়েছেন শকুর। ঘোষিত সাজার মেয়াদ থেকে এই সময় বাদ যাবে। শকুরের বয়স এখন ৪৭ বছর।

২০০৭ সালের ১ জানুয়ারির ঘটনা। পূর্ব লন্ডনের ইস্ট হ্যাম এলাকার বাসায় স্ত্রী জুলি বেগম (২৬) এবং দুই কন্যাসন্তান আনিকা (৫) ও তানহাকে (৬) হত্যা করেন শকুর। ১০ জানুয়ারি ওই বাসা থেকে মা ও দুই সন্তানের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগেই বাংলাদেশে পাড়ি জমান রেস্তোরাঁর শেফ হিসেবে কাজ করা শকুর।

বাংলাদেশে শ্যালিকার কাছে স্ত্রী-সন্তানকে খুনের কথা স্বীকার করেন শকুর। এ কথা প্রকাশ না করতে শ্যালিকা ও তাঁর সন্তানদেরও হত্যার হুমকি দেন। একপর্যায়ে আত্মগোপনে চলে যান তিনি। কয়েক বছর পর ভারতে তাঁর সন্ধান মেলে।

২০১৩ সালের মে মাসে ভারতে গ্রেপ্তার হন শকুর। ২০১৯ সালের এপ্রিলে তাঁকে বিচারের মুখোমুখি করতে যুক্তরাজ্যে ফিরিয়ে আনা হয়। দীর্ঘ শুনানির পর লন্ডনের ওল্ড বেইলি আদালত বৃহস্পতিবার আলোচিত ওই খুনের ঘটনার বিচার নিশ্চিত করল।

আদালতের শুনানি থেকে জানা যায়, আবদুল শকুরের সঙ্গে যখন বিয়ে হয়, তখন জুলি বেগমের বয়স ছিল ১৯ বছর। শকুরকে যুক্তরাজ্যে আনার পর একপর্যায়ে শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। ছেলেসন্তান না হওয়ায় জুলি বেগমের ওপর খুশি ছিলেন না শকুর। তাঁর যুক্তরাজ্যে ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর প্রশ্নেও স্ত্রীর সঙ্গে বিবাদ শুরু হয়। এমন কলহের জের ধরেই শকুর স্ত্রী-সন্তানদের খুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে যান।

বিচারক রিচার্ড মার্কস এই হত্যাকাণ্ডকে পৈশাচিক, নির্মম ও কাপুরুষোচিত বলে মন্তব্য করেন। ওই ঘটনাকে মাত্র ৪ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার নারী জুলি বেগম ও দুই শিশুর ওপর ৬ ফুট উচ্চতার বিশাল দেহী ঘাতকের জঘন্য আক্রমণ বলে উল্লেখ করেন তিনি। এমন অপরাধের পরও কোনো প্রকাশের অনুশোচনা না থাকায় খুনিকে ভর্ৎসনা করেন বিচারক।