ব্রিটিশ এমপিকে জোর করে দুবাইগামী বিমানে তুলে দিল ভারত

ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা ডেবি আব্রাহামস।
ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা ডেবি আব্রাহামস।

ভারতে দিল্লির বিমানবন্দরে নেমেছিলেন ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা ডেবি আব্রাহামস। কিন্তু ইমিগ্রেশন পার হয়ে আর ভারতে ঢোকা হয়নি তাঁর। বিমানবন্দর থেকেই সোজা তাঁকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইগামী উড়োজাহাজে তুলে দেওয়া হয়েছে। এমন ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় আব্রাহামস বলেছেন, তাঁর সঙ্গে ‘আসামিদের’ মতো আচরণ করা হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার ডেবি আব্রাহামসের সঙ্গে এই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। কয়েক মাস আগে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদ সংক্রান্ত ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল বিষয়ে সমালোচনা করেছিলেন আব্রাহামস। তবে আব্রাহামসকে ভারতে প্রবেশ করতে না দেওয়ার কারণ হিসেবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলেছে, তাঁর ভিসা যথাযথ ছিল না।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের মন্তব্যের পর দিল্লির ব্রিটিশ হাইকমিশন বলেছে, কেন আব্রাহামসকে ভারতে প্রবেশ করতে দেওয়া হলো না, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন তাঁরা।

এক বিবৃতিতে আব্রাহামস বলেছেন, সোমবার ভারতীয় সময় সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে দিল্লি বিমানবন্দরে নামেন তিনি। কিন্তু তখন বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা তাঁকে জানান, তাঁর ই-ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। আব্রাহামসের ভাষ্য, ‘বাকি সবার মতো আমিও আমার ই-ভিসা ইমিগ্রেশন ডেস্কে দেখাই এবং ছবি তুলি। তখন কর্মকর্তারা স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে মাথা ঝোঁকাতে থাকেন। আমাকে তিনি বললেন, আপনার ভিসা প্রত্যাখ্যান করা হলো। এরপর আমার পাসপোর্ট নিয়ে মিনিট দশেকের জন্য উধাও হয়ে যান। যখন তিনি ফিরে এলেন, তখন তিনি খুবই কঠোর আচরণ করছিলেন। চিৎকার করে বললেন, আমার সঙ্গে আসুন। আমি তাঁকে আমার সঙ্গে এমন আচরণ করতে বারণ করি।’

এরপর আব্রাহামস তাঁর এক আত্মীয়কে ফোন দেন এবং ব্রিটিশ হাই কমিশনেও ফোন দেন। তিনি ‘অন অ্যারাইভাল’ ভিসার আবেদন করলে সেটিও প্রত্যাখ্যান করা হয়। এরপর ভারতে প্রবেশ করতে না দিয়ে তাঁকে বিমানবন্দর থেকেই জোর করে দুবাইগামী বিমানে তুলে দেওয়া হয়। আব্রাহামস বলেছেন, বিমানবন্দরের কর্মকর্তাদের আচরণ এমন ছিল, যেন তিনি আসামি।

এ ঘটনার সঙ্গে তাঁর কাশ্মীর সংক্রান্ত সমালোচনার যোগসূত্র থাকতে পারে, এমন আঁচ পাচ্ছেন আব্রাহামস নিজেও। নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘সবার জন্য মানবাধিকার ও সামাজিক ন্যায্যতা নিশ্চিত করার জন্যই আমি সংসদ সদস্য হয়েছি। অন্যায় দেখলে আমি সমালোচনা করবই, হোক সে আমার সরকার কিংবা অন্য কোনো সরকার।’

গত বছরের ৫ আগস্ট সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদ করে ভারতীয় সরকার। এরপর ভারত সরকারের এমন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে একটি চিঠি লিখেছিলেন আব্রাহামস। এ ছাড়া তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্টেও এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে বেশ কিছু পোস্ট রয়েছে।