করোনাভাইরাস: বাবা চিকিৎসক হলেই সন্তানের পোয়াবারো

চীনে নতুন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ছেন চিকিৎসক–নার্সরা। এর প্রতিদান দিতে স্থানীয় প্রশাসন নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বলা হচ্ছে, হুবেই প্রদেশে করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করা চিকিৎসকদের সন্তানেরা স্কুল–কলেজে ভর্তির আবেদনের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা পাবে।

বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, আজ মঙ্গলবার চীনা কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, হুবেই প্রদেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে চিকিৎসকেরা জীবন বাজি রেখে লড়াই করছেন। এর প্রতিদান হিসেবে চলতি বছর তাঁদের সন্তানদের স্কুল–কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় অতিরিক্ত ‘পয়েন্ট’ দেওয়া হবে।

চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এই এলাকাকেই নতুন করোনাভাইরাসের আঁতুড়ঘর হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে। চীনা কর্তৃপক্ষ গত সপ্তাহে জানিয়েছিল, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশটির ছয়জন স্বাস্থ্যকর্মী মারা গেছেন। আর সংক্রমিত হয়েছেন ১ হাজার ৭১৬ জন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে তাঁরাও আক্রান্ত হন। এরই মধ্যে হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানের একটি হাসপাতালের পরিচালক করোনাভাইরাসের সংক্রমণে মারা গেছেন বলে জানা গেছে।

চীনের স্কুল ব্যবস্থায় পরীক্ষার বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভালো স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য অপেক্ষাকৃত কমবয়সী শিক্ষার্থীদেরও কঠিন ও প্রবল প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়। চীনা কর্তৃপক্ষ বলছে, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চিকিৎসকদের উৎসাহিত করতেই তাঁদের সন্তানদের ভর্তি পরীক্ষায় অতিরিক্ত ১০ ‘পয়েন্ট’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তবে এই সিদ্ধান্তের সমালোচনাও করছেন অনেকে। নিন্দুকদের অভিযোগ, এ ধরনের সুবিধা দেওয়া অন্যায়। আর দিলেও তা শুধু হুবেই প্রদেশের জন্য বরাদ্দ করা উচিত হবে না। কারণ অন্যান্য প্রদেশের চিকিৎসকেরাও করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, বাবার ভালো কাজের জন্য সন্তানদের পুরস্কৃত করার কোনো অর্থ নেই। এর ফলে শিক্ষা খাতে বৈষম্য সৃষ্টি হতে পারে।

উহানে গত ডিসেম্বরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করে। এই ভাইরাসের সংক্রমণে কোভিড-১৯ রোগে প্রথম রোগী মারা গিয়েছিল গত ৯ জানুয়ারি। এর পর থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমিত রোগী মরছেই। আর সংক্রমণের পরিমাণও দিন দিন বাড়ছে। চীনে এখন পর্যন্ত মৃত মানুষের সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৯০০। আর সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা ৭২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।