দিল্লির শাহীনবাগে তিন মধ্যস্থতাকারী

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) প্রত্যাহারের দাবিতে দিল্লির শাহিনবাগের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলতে গেলেন সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত তিন মধ্যস্থকারী। আজ বুধবার বেলা তিনটায় সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী সঞ্জয় হেগড়ে ও সাধনা রামচন্দ্রন প্রথমে শাহিনবাগে যান। আড়াই ঘণ্টা ধরে কথা বলে তাঁরা ফিরে যান বিকেল সাড়ে পাঁচটায়। তারপর সেখানে যান দেশের সাবেক তথ্য কমিশনার ওজাহাত হবিবুল্লাহ।

সাধনা রামচন্দ্রন শাহিনবাগ ছেড়ে চলে যাওয়ার আগে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের জানান, বৃহস্পতিবার তাঁরা আবার সেখানে যাবেন। কারণ, এক দিনে সবার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব নয়।

শাহিনবাগের রাস্তাজুড়ে শান্তিপূর্ণ সত্যাগ্রহ আন্দোলন চলছে গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর থেকে। আজ ছিল আন্দোলনের ৬৬তম দিন। আন্দোলনকারীদের দাবি, বিতর্কিত সিএএ প্রত্যাহার করতে হবে এবং সরকারকে বলতে হবে, সারা দেশে এনআরসি হবে না। তাঁরা চান, সরকারের কেউ তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে শাহিনবাগে আসুন। কিন্তু সরকারের কোনো প্রতিনিধি শাহিনবাগ যেতে আগ্রহী নন। এদিকে রাস্তা অবরোধের জন্য ওই এলাকায় যানজট হচ্ছে নিত্যদিন। এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দাখিল হয়। সুপ্রিম কোর্ট গত সোমবার তিন মধ্যস্থতাকারীকে অনুরোধ করেন, তাঁরা যেন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে মীমাংসায় সচেষ্ট হন। আগামী সোমবার সুপ্রিম কোর্টের কাছে তাঁদের রিপোর্ট দেওয়ার কথা।

আজ দুপুর ১২টায় জানাজানি হয়, মধ্যস্থতাকারীরা শাহিনবাগে যাচ্ছেন। গোটা এলাকায় পুলিশি প্রহরা বাড়ানো হয়। বেলা তিনটায় সঞ্জয় হেগড়ে ও সাধনা রামচন্দ্রন শাহিনবাগ পৌঁছান। এর আগেই সেখান থেকে বের করে দেওয়া হয় সাংবাদিকদের। যদিও আন্দোলনকারীরা পুলিশকে বলেন, মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলবেন সবার উপস্থিতিতে। সেখানে সাংবাদিকদেরও থাকতে দিতে হবে, যাতে আলোচনার গতিপ্রকৃতি অবিকৃত থাকে। সেই দাবি অবশ্য মানা হয়নি। সাধনা রামচন্দ্রন আন্দোলনকারীদের বলেন, ‘আপনারা চাইলে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতেই পারেন। কিন্তু আমরা তাঁদের উপস্থিতিতে কথা বলব না।’

সঞ্জয় হেগড়ে ও সাধনা রামচন্দ্রন দুজনেই ধরণা মঞ্চে উঠে তাঁদের উদ্দেশে ব্যাখ্যা করেন। কেন তাঁরা শাহিনবাগে এসেছেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ কী ছিল, সঞ্জয় তা ব্যাখ্যা করেন। হিন্দিতে তা তর্জমা করেন সাধনা। তিনি এ কথাও বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট আপনাদের আন্দোলনের অধিকারকে মেনে নিয়েছেন। আমরা সবার সঙ্গে কথা বলব। আমরা এমন একটা সমাধানে পৌঁছাতে চাই, যা সবার কাছে দৃষ্টান্তমূলক হয়ে থাকবে।’

সুপ্রিম কোর্ট গত সোমবার জানিয়েছেন, আন্দোলনের অধিকার মৌলিক অধিকার। কিন্তু তারও একটা সীমা–পরিসীমা আছে। সবাই পথ অবরোধ করলে মানুষ যাবে কোথায়?